আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণ দেখিয়ে কলকাতার জি ডি বিড়লা সহ বিড়লা গোষ্ঠীর পাঁচটি নামি স্কুল (G D Birla School) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ছ’টা নাগাদ স্কুলে পৌঁছে পড়ুয়ারা দেখেন মূল গেট বন্ধ। সেখানে ঝোলানো রয়েছে নোটিস। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার স্বার্থে স্কুল বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে নোটিসে উল্লেখ করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের এই আচরণে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।
করোনা কালের দীর্ঘ দু বছর অনলাইন ক্লাস চলার পর এপ্রিলের শুরু থেকে স্কুলে ফিরছে পড়ুয়ারা। কিন্তু বেশকিছু পড়ুয়ার ফি বকেয়া থাকায় তাদের ক্লাসে ঢুকতে বাধা দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল চত্বরেই চলে অভিভাবকদের বিক্ষোভ। এর পরই আদালতের দ্বারস্থ হন সেই অভিভাবকরা। দায়ের হয় পিটিশান। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, বেসরকারি স্কুলে ফি বকেয়া থাকলেও পড়ুয়াদের ক্লাসে ওঠা আটকানো যাবে না। ক্লাস করার ক্ষেত্রেও বাধা দেওয়া যাবে না। আদালতের এই রায়ে নৈতিকভাবে জয় পান অভিভাবকরা
এর পর স্বাভাবিকভাবেই বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ছ’টায় স্কুলে যায় পড়ুয়ারা। কিন্তু স্কুলে ঢুকতে পারেনি তারা। নোটিস দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু জিডি বিড়লা নয়, শহরে বিড়লা গোষ্ঠীর ৫টি স্কুলই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এই সিদ্ধান্তে ব্যাপক ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত পড়ুয়ারাও।
অভিভাবকদের অনেকেই বলছেন, বিড়লা গ্রুপ গুটিকয়েক অভিভাবকের কাছে হার মানতে না পেরে। ২০১৭ সালে জি ডি বিড়লা স্কুলে যখন পড়ুয়ার যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছিল, তখনও একইভাবে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
কী কী নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ?
১) রাজ্যের ১৪৫ টি বেসরকারি স্কুল কোন পড়ুয়ার প্রমোশন আটকাতে পারবে না। কোন পড়ুয়ার মার্কশিট আটকানো যাবে না।
২) সমস্ত পড়ুয়াকে নতুন ক্লাসে যোগদান করতে দিতে হবে এবং তাদের প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা দিতে হবে।
৩) কোভিডকালে কোন পড়ুয়া কত ফি দিয়েছে, তার হিসাব আদালত নিযুক্ত বিশেষ আধিকারিকদের দিতে হবে।
৪) সব নথি খতিয়ে দেখে কোন পড়ুয়ার কত বকেয়া রয়েছে, তা নির্ধারণ করবেন আদালত নিযুক্ত বিশেষ আধিকারিক।
৫) আদালত নিযুক্ত বিশেষ আধিকারিক যে বকেয়া ফিস নির্ধারণ করবেন, তা দিতে হবে অভিভাবকদের।
৬) যারা কোভিডকালে কোন ফি দেননি, তাদের নামও নথিবদ্ধ করবে আদালত নিযুক্ত বিশেষ আধিকারিকরা।
৭) অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধির বিষয়টিও খতিয়ে দেখবেন আদালত নিযুক্ত বিশেষ আধিকারিকরা।