সোমবার থেকে খুলছে জিডি বিড়লা স্কুল। শনিবার নোটিস দিয়ে একথা জানাল স্কুল কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে ওই নোটিসে বলা হয়েছে, যে সকল পড়ুয়ার ফি বাকি আছে, তারা কোনও ভাবেই স্কুলে ঢুকতে পারবে না। গত বৃহস্পতিবার আচমকাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার রানিকুঠির জিডি বিড়লা স্কুল। সকালে স্কুলে গেটে একটি নোটিস দেখতে পায় পড়ুয়া ও তার অভিভাবকরা। সেখানে স্কুল বন্ধের কারণ স্পষ্ট করা হয়েছিল। এরআগে করোনার জেরে বন্ধ ছিল স্কুল। পরিস্থিতি ঠিক হওয়ার পর ফের স্কুল খুলেছিল। কিন্তু এবার এক নতুন সমস্যা তৈরি হয়। অভিভাবকদের একাংশ, স্কুলের ফি বৃদ্ধি নিয়ে প্রতিবাদ করেন। তাঁদের দাবি, ফি বাড়ানো চলবে না। যা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই স্কুলের সামনে অভিভাবকদের আন্দোলন, বিক্ষোভ চলছিল। বৃহস্পতিবার স্কুল কর্তৃপক্ষ আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণ দেখিয়ে এবং পড়ুয়াদের নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। শুধু রানিকুঠির এই স্কুল নয়, এর আগে তাদের অধীনে থাকা আরও দুটি স্কুলও এই একই কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে ছ'টি ক্যাম্পাস মিলিয়ে প্রায় দশ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। এই খবর জানার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা।
স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও কিছু না জানিয়েই এ ভাবে নোটিস দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের মধ্যে অনেকেরই অভিযোগ, যাঁরা স্কুল নির্ধারিত ফি জমা দেয়নি, তাঁদের সঙ্গে কথা বলুক স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যাঁরা সম্পূর্ণ ফি জমা দিয়েছে, তাঁদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ তো অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হল। এর মধ্যেই আবার সামনে বোর্ডের পরীক্ষা রয়েছে। ফলে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দেবে যে সব পড়ুয়া, তাদেরই বা কী হবে, প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ছ’টা নাগাদ জি ডি বিড়লা স্কুলে পৌঁছে পড়ুয়ারা দেখেন মূল গেট বন্ধ। সেখানে ঝোলানো রয়েছে নোটিস। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার স্বার্থে স্কুল বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে নোটিসে উল্লেখ করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এদিকে, গোটা বিষয়ের ওপর নজর রাখছে রাজ্য সরকার। জানা গেছে, প্রয়োজনে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে পারে স্কুল শিক্ষা দফতর(School Education Department)।
স্কুলে বেশকিছু পড়ুয়াকে ঢুকতে না দেওয়ায় আদালতের দারস্থ হন সেইসব পড়ুয়াদের অভিভাবকরা। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের(Kolkata High Court) ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, বেসরকারি স্কুলে ফি(School Fee) বকেয়া থাকলেও পড়ুয়াদের ক্লাসে ওঠা আটকানো যাবে না। ক্লাস করার ক্ষেত্রেও বাধা দেওয়া যাবে না। আদালতের এই রায়ে নৈতিকভাবে জয় পান অভিভাবকরা। অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, বিড়লা গ্রুপ গুটিকয়েক অভিভাবকের কাছে হার মানতে না পেরে স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে। তাঁরা মনে করান, ২০১৭ সালে জি ডি বিড়লা স্কুলে(GD Birla School) যখন পড়ুয়ার যৌন হেনস্তার অভিযোগ ওঠার পরেও একই পদক্ষেপ নেয় স্কুল।