যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর (JU student death) ঘটনায় শুক্রবার রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে তিনজনকে । তাদের মধ্যে রয়েছে হিংমাশু কর্মকারও । বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র । বাড়ি মুর্শিদাবাদের নিমতিতায় দুর্গাপুর কর্মকারপাড়ায় । এদিন, সকাল থেকেই তালা ঝুলছে সেই বাড়িতে । কেউ নেই । ছেলের গ্রেফতারির পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা । হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন । এমনটাই জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা । তাঁদের কথায়, হিমাংশু (Himanshu Karmakar) খুব ভাল ছেলে, মেধাবী । হিমাংশু যে এমন কিছু করতে পারে, তাঁরা বিশ্বাস করতে পারছে না ।
স্বামী নেই, মুর্শিদাবাদের বাড়িতে একাই থাকেন হিমাংশুর মা মিতালী দাস কর্মকার । তিনি স্থানীয় শেরপুর শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকা। হিমাংশুর দিদিও রয়েছে । বাইরে পড়াশোনা করেন তিনি । ছেলের গ্রেফতারির খবর শুনেই শুক্রবার রাতে মাথা ঘুরে পড়ে যান মিতালী দেবী । এক প্রতিবেশী জানাচ্ছেন, কিছুদিন আগেই হিমাংশুর মা দুর্ঘটনায় চোট পেয়েছিলেন। মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে আবার একই জায়গায় চোট লাগে তাঁর । এরপরই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ।
হিমাংশুর কাকা সুকুমার কর্মকার তাঁদের বাড়ির পাশেই থাকেন । তাঁর দাবি, তাঁর ভাইপো গণিতে পিএইচডি করছিল । এক নম্বর জুয়েল ছেলে । তাঁর কথায়, ছোটবেলা থেকেই হিমাংশু পড়াশোনার জন্য বাইরে থেকেছে। গ্রামের বাড়িতে সে খুব কমই আসত। স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষার রেজাল্ট বের হওয়ার পর এমটেক করার সুযোগ পেয়েছিল হিমাংশু । পাশাপাশি অঙ্ক নিয়ে গবেষণারও সুযোগ পায় । কিন্তু এমটেক না পড়ে গত ৫ অগাস্ট থেকে সল্টলেকের একটি কেন্দ্র থেকে গবেষণার কাজ শুরু করেছিল ।' কিন্তু,কেন যাদবপুরের হস্টেলে ছিল হিমাংশু, তা তিনি জানেন না ।
আরও পড়ুন, Calcutta University : যাদবপুরের পর এবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, পড়ুয়াকে ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ
মুর্শিদাবাদের প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে হিমাংশু ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। বহরমপুর শহরে জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে স্নাতক স্তরে ভর্তি হয়েছিলেন । কিন্তু এর কিছুদিনের মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অঙ্কে স্নাতক স্তরে পড়াশোনার সুযোগ পেয়ে যাওয়ায় কলকাতাতে চলে যান তিনি । স্নাতকোত্তর স্তরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে এবছর জুলাই মাসে পাস করেছেন হিমাংশু ।
শনিবার আলিপুর আদালতে তোলা হবে ধৃত তিন পড়ুয়াকে । যাদবপুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । এছাড়া, এই ঘটনায় আরও কয়েক জনের ভূমিকা পুলিশের আতশকাচের তলায় রয়েছে।