Pulastya Acharya: পেশা তাঁর ডাক্তারি, বই তাঁর নেশা! আরজি করের লড়াইয়ের 'যোদ্ধা' পুলস্ত্য

Updated : Oct 23, 2024 16:20
|
Editorji News Desk

সমাজের কাছে সাধারণ মানুষের কাছে ‘ডাক্তার’ শব্দটি ‘ভগবান’এর সমর্থক ছিল। কিন্তু পান থেকে চুন খসলে সেই ডাক্তারদের গায়েও উঠত হাত। কিন্তু গত ২ মাস ধরে, এক ঝাঁক আন্দোলনরত ডাক্তাররা বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরাও রক্ত মাংসের মানুষ। থ্রেট কালচার, নিরাপত্তা,  সহকর্মীর বিচার, স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণ, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, সেন্ট্রালাইজড রেফারেল সিস্টেম সহ ১০ দফা দাবি নিয়ে সোচ্চার হন জুনিয়র ডাক্তাররা। সহকর্মীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া নির্মম পাশবিক ঘটনার বিচারের দাবিতে অনড় থেকে এই আন্দোলনকে অক্সিজেন যোগান তাঁরা। যা ধীরে ধীরে গণ আন্দোলনের রূপ নেয়। কাতারে কাতারে সাধারণ মানুষ এসে যোগ দেন তাঁদের কর্মসূচিতে। এই আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠেন ভবিষ্যতের চিকিৎসকেরা। 


সেই আন্দোলনে অনিকেত মাহাতো, দেবাশিস হালদার, কিঞ্জল নন্দ, স্নিগ্ধা হাজরাদের সঙ্গে প্রথম থেকেই সামিল হয়েছিলেন পুলস্ত্য আচার্যও। ধর্মতলায় প্রথম দিন থেকে যে ৬ জন জুনিয়র ডাক্তার অনশন শুরু করেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের পিজিটি প্রথম বর্ষের পড়ুয়া পুলস্ত্য । 

 

টানা আট দিন অনশনের পর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে। তলপেটে যন্ত্রণা, বমির উপসর্গ, জলশূন্যতা - পুলস্ত্যকে নিয়ে ছুটতে হয়েছিল এনআরএস-এর  সিসিইউতে।  জেনারেল মেডিসিন, চেস্ট, কার্ডিও, নেফ্রো এবং অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলে পুলস্ত্যর । এরপর সুস্থ হয়ে ফিরেই পুলস্ত্য জানিয়েছিলেন, দ্রুত ধর্ণামঞ্চে ফিরতে চান তিনি। 

 

পুলস্ত্য ওরফে পম্পুকে এই মুহূর্তে সকলে চেনেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার হিসেবে। আসানসোলের এই ছেলের প্রতিবেশীদের যদিও দাবি, এই প্রথম নয়, মানুষের পাশে, মানুষের জন্য কাজ করার স্পৃহা, ইচ্ছে, জেদ পুলস্ত্যর মধ্যে আগেও দেখেছেন তাঁরা। করোনা কালে আসানসোলের প্রায় ১০০ জন যুবককে নিয়ে পুলস্ত্যরা গড়ে তগুলেছিলেন রেড ভলান্টিয়ার বাহিনী। দাঁড়িয়ে থেকে দুঃস্থ মানুষদের মুখে অন্নের যোগান দিতে চালিয়েছেন ‘লাল চে-হেঁসেল’ । তাঁর এমবিবিএস পাস মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ থেকে। তখন পুলস্ত্যরা ছাত্র। আসানসোলের পাশাপাশি মেদিনীপুরের মানুষদের জন্যও যারপরনাই করেছেন ডাক্তার পুলস্ত্য। মেদিনীপুরে তাঁদের উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল ‘আরক্তিম গ্ৰুপ’, যেখানে করোনা আক্রান্তদের অন কল পরামর্শ দিতেন পুলস্ত্যরা। 

RG Kar Case: 'শূন্য' ধর্মতলা, হাসপাতালে ৭ জুনিয়র ডাক্তার, মেয়ের বিচার চেয়ে অমিত শাহকে মেল পরিবারের
 

অনশন উঠেছে, আসানসোলের বাড়িতে ফিরেছেন পুলস্ত্য। এখন তাঁর মাথায় গিজগিজ করছে মোবাইল লাইব্রেরির পরিকল্পনা। ভবিষ্যতে বই পড়ার অভ্যাস বাড়াতে আসানসোল শহরে একটি মোবাইল ভ্যান সমেত লাইব্রেরি বা চলমান গ্রন্থাগার তৈরি করতে চান তিনি। করোনা কালে যখন মানুষ প্রতিনিয়ত মৃত্যু ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে, তখন দুঃসময় কাটিয়ে মানুষের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস ফেরাতে অভিনব উদ্যোগ নেন পুলস্ত্য। ‘বই-সাম্য’, নাম দিয়ে একটি সাইলেন্ট রিডিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছিলেন তাঁরা। ১০-১২ জন মিলে নীরবে পাঠাগারের সামনে বই পড়তে বসে যেতেন। তাঁদের দেখে অনেকেই বই পড়তে এগিয়ে আসতেন তাঁদের সঙ্গেই। 


আপাতত কিছুদিন নিজের বাড়িতেই থাকবেন এই পুলস্ত্য। চোখে স্বপ্ন রয়েছে আগামী প্রজন্মকে বই পড়ার অভ্যেস তৈরি করতে মোবাইল লাইব্রেরি তৈরি করবেন তিনি। আপাতত কদিন, ছেলে আসানসোলে নিজেদের কাছেই থাক, এমনটাই চান পুলস্ত্যর বাবা মা। তবে পুলস্ত্যর কথা, কোনও জরুরি দরকার হলে অবশ্যই কলকাতা ফিরবেন  তিনি। 

RG Kar Case

Recommended For You

editorji | কলকাতা

Sampriti Overpool: ৮ ঘণ্টা সম্প্রীতি উড়ালপুলে যান চলাচল বন্ধ, ৯০ দিন কীভাবে যাতায়াত করবেন!

editorji | কলকাতা

Kolkata Yellow Taxi: মিটার ডাউন! কলকাতার বৃদ্ধ হলুদ ট্যাক্সি, ঐতিহ্য নাকি আদিখ্যেতা? কী বলছে শহর?

editorji | কলকাতা

Jagannath Temple Digha: জগন্নাথ দেবকে আর প্রসাদে দেওয়া হবে না খাজা

editorji | কলকাতা

Kolkata Yellow Taxi: দূষণ গেরোয় ফ্যাকাসে হলুদ, রাজপথে বাতিলের খাতায় কলকাতার 'বৃদ্ধ' ট্যাক্সি

editorji | কলকাতা

Mamata Banerjee : ভারত সরকার হিন্দুদের রক্ষা করুক, বাংলাদেশে ইস্যুতে কেন্দ্রের কোর্টেই বল ঠেললেন মমতা