গত শনিবার ১০ দফা দাবি নিয়ে ধর্মতলায় আমরণ অনশন শুরু হয়েছিল। অষ্টম দিনে পড়ল জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন। ১৫৪ ঘণ্টা অতিক্রান্ত। এক সপ্তাহ পরে কেমন আছেন অনশনরত চিকিৎসকরা! শারীরিকভাবে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ছেন অনশনকারীরা। বলছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের একাংশ। তবে মনোবল একেবারেই কমেনি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে।
এক সপ্তাহ আগে কলকাতার বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের ৬ জন পড়ুয়া তনয়া পাঁজা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও পুলস্ত্য আচার্য অনশনে যোগ দেন। রবিবার অনশনে যোগ দেন অনিকেত মাহাতো। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার রাতে আলোলিকা ঘোড়ুই এবং পরিচয় পন্ডা, দুই চিকিৎসক অনশনে যোগ দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে যে দুজন অনশন করছেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেছেন কলকাতার পড়ুয়ারা। সমন্বয় রেখেই কাজ চলছে।
শনিবার সকালেও ধর্মতলার অনশন মঞ্চের দৃশ্যটা খানিকটা একই রকম। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন আন্দোলনকারীরা। দুর্বল হলেও অনশনরত ৬ চিকিৎসকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। রক্তচাপ, সুগার, সবই সময় করে মাপা হচ্ছে। প্রত্যেক অনশনকারীর স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
রবিবার সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ বেঙ্গল শাখা কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় ১২ ঘণ্টার প্রতীকী অনশনের ডাক দিয়েছে। IMA বেঙ্গল শাখার সদস্য চিকিৎসক দ্বৈপায়ন মজুমদার জানিয়েছেন, সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন করবেন চিকিৎসকরা। যদি দাবি পূরণ না হয়, তা হলে ধর্মঘটেরও হুঁশিয়ারি আইএমএ-এর। তাদের তরফে বলা হয়েছে, জুনিয়র চিকিৎসকরা যে ১০ দফা দাবি সামনে রেখে আন্দোলন করছে, তা রবিবারের মধ্যে পূরণ না হলে রাজ্য শাখা ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটে সামিল হবেন তাঁরা।
শুক্রবার ধর্মতলার মহাসমাবেশ থেকে রবিবার নতুন কর্মসূচি নিয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের ফ্রন্টও। একাদশীর দিন, রাজ্যের ঘরে ঘরে তাঁরা অরন্ধন পালনের ডাক দিয়েছেন। সোমবার থেকে আংশিক কর্মবিরতি পালন করবেন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের কর্মীরাও। ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বেশ কিছু হাসপাতাল ও নার্সিং হোম।
এদিকে শুক্রবার রাতেই জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি নিয়ে রাজ্য সরকার কতটা এগিয়েছে, কাজের খতিয়ান জানিয়ে স্ট্যাটাস রিপোর্ট পাঠান মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে অনশন প্রত্যাহারের আবেদনও করেন। হাসপাতালের নিরাপত্তার স্বার্থে রাজ্যের মেডিকেল কলেজগুলিতে ৯০ শতাংশ কাজও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ১৫ অক্টোবরের মধ্যে আরজি কর-সহ সব মেডিকেল কলেজে কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশ্বাসও দেন তিনি।