বৈঠক নয়, এ যেন ম্যারাথন। যার নিট ফল কার্যত নিষ্ফলা। রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য ভবন থেকে বেরিয়ে এই দাবি করলেন আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা। জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠনের অন্যতম নেতা দেবাশিস হালদার জানিয়েছেন, তাঁদের ১০ দফা দাবি যে মানা হচ্ছে, তা নিয়ে এদিনের বৈঠকে কোনও লিখিত প্রতিশ্রুতি দেয়নি সরকার। কতদিনের মধ্যে হাসপাতালের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার সব কাজ শেষ হবে, তাও জানাতে পারেনি সরকার। তাঁদের অভিযোগ, অনশন মিটে যাক এটা চায় না সরকার। সরকার এতটা অনমনীয় হবে, সেটা ভাবতে পারেননি জুনিয়র ডাক্তাররা। ফলে, ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনে সরকারের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠকের পর আমরণ অনশনের সিদ্ধান্তেই অনড় রইলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের হাত শক্ত করতে আজ, বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে প্রতীকি অনশনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
তবে, জুনিয়র ডাক্তারদের এই অভিযোগ মানতে চায়নি রাজ্য। বৈঠক শেষে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ মেনেই আলোচনা হয়েছে। সেন্ট্রাল রেফারেল স্টিটেম মেনে বৈঠকে কথা হয়েছে। রাজ্য জুনিয়র ডাক্তারদের প্রস্তাব দিয়েছে ১৫ অক্টোবর থেকে পাইলট প্রজেক্টের কাজ শুরু হবে। যা ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন তোলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ, সব কাজ একদিনে করা সম্ভব নয়।
বোধনের সন্ধ্যায় সরকারের পক্ষ থেকে ইমেল আসে জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে। রাজ্যের তরফে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বৈঠকের জন্য জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্য ভবনে আসতে অনুরোধ করেন। রাত পৌনে আটটা নাগাদ এই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা ছিল। ২৯ জনকে নিয়ে রাত সাড়ে নটা নাগাদ স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে হাজির হন জুনিয়র ডাক্তাররা।
যাওয়ার আগেই অবশ্য ধর্মতলায় তাঁদের অনশন মঞ্চে এই বৈঠকের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। নিজেদের ১০ দফা দাবি থেকে তাঁরা এক পা পিছু হঠবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এদিনের বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে মুখ্য সচিব ছাড়াও হাজির ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা।
তাঁদের দাবি টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা কতটা বাস্তবায়িত করতে পারবেন, তা বৈঠকের আগেই প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। তবুও অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই সরকারের সঙ্গে বৈঠক করার ব্যাপারে সম্মতি জানান জুনিয়র ডাক্তাররা। বৈঠক শেষে তাঁরা দাবি করেছেন, অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহের আগে কোনও কিছু সম্ভব নয় বলেই সরকারের পক্ষে তাঁদের জানানো হয়েছে।