স্বাধীনতার পর কেটে গিয়েছে সাড়ে ৭ দশকেরও বেশি সময়। কিন্তু এখনও কোনও বাঙালিকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার বসতে দেখেনি ভারত। একবারই মাত্র তৈরি হয়েছিল সেই সুযোগ। ন'য়ের দশকে প্রধানমন্ত্রীত্বের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল এক বাঙালি রাজনীতিবিদ। কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টির মতাদর্শগত জটিলতায় প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি জ্যোতি বসু৷
৮ জুলাই এই কিংবদন্তি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ১০৯ তম জন্মদিবস৷ একটানা ২৩ বছর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। দশকের পর দশক শরিকদের নিয়ে চালিয়েছেন বামফ্রন্ট সরকার। বস্তুত কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে সংসদীয় ব্যবস্থায় এত বছরের সরকার চালানোর নজির বিশ্বে কোথাও নেই।
জ্যোতি বসুর শাসনকালে যেমন পঞ্চায়েত ব্যবস্থার শক্তিবৃদ্ধি, ভূমি সংস্কারের মতো সামাজিক-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মোড় বদলে দেওয়া কাজ হয়েছে, তেমনই প্রায় আড়াই দশকের এই কালপর্ব জন্ম দিয়েছে অসংখ্য বিতর্কের। কিন্তু জ্যোতি বসু তো কেবল একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না, আলো-অন্ধকার মিলিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গরাজনীতির মহীরুহ।
বিলেতে পড়াশোনা শেষ করে ফেরার পরই হাতেখড়ি কমিউনিস্ট রাজনীতিতে। এরপর শ্রমিক আন্দোলনের রাস্তা ঘুরে হয়ে ওঠা প্রবাদপ্রতিম জননেতা৷ একটানা দু'দশক সফল বিরোধী নেতার ভূমিকায় থাকার পর ১৯৬৭ সালে জ্যোতি বসু প্রথম মন্ত্রী হলেন যুক্তফ্রন্ট সরকারের। তার ঠিক এক দশক পর তৈরি হল বামফ্রন্ট সরকার।
জ্যোতি বসুর রাজনৈতিক জীবন প্রায় সাত দশকের৷ এই শতকের প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। ২০০৮ পর্যন্ত ছিলেন সিপিআই(এম) দলের পলিটব্যুরোর সদস্য। গত ১২ বছর তিনি নেই৷ কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী জাতীয় তথা বঙ্গ রাজনীতির আলোচনা তাঁকে বাদ দিয়ে অসম্ভব।