আরজি কর কাণ্ডের জের। কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে সরকারি ভাবে সরিয়ে দেওয়া হল বিনীত গোয়েলকে। মঙ্গলবার তাঁর বদলে লালবাজারের দায়িত্ব নিলেন মনোজ ভার্মা। সোমবারই আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকের পর বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ইঙ্গিত মতো, মঙ্গলবার মনোজ ভার্মার নামের উপরেই সিলমোহর দিল রাজ্য।
১৯৬৮ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর রাজস্থানের সওয়াই মাধোপুরে জন্ম মনোজ ভার্মার। ভেবেছিলেন ইঞ্জিনিয়ার হবেন। কিন্তু সেই ভাবনা থেকে সরে যোগ দেন পুলিশ ফোর্সে। রাজ্যে তখন বামেদের শাসন। পশ্চিম মেদিনীপুরে মাওবাদীদের বাড়বাড়ন্তের অভিযোগ। সেই সময় জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্বে পাঠানো হয়েছিল মনোজকে।
তৈরি করা হয়েছিল কাউন্টার ইমার্জেন্সি ফোর্স। সেই বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন মনোজ ভার্মা। জঙ্গলমহলে কিষেণজির এনকাউন্টারে দিয়েছিলেন নেতৃত্ব ছিল তাঁর। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর জঙ্গলমহলের পর পাহাড়েও আইন-শৃঙ্খলা আয়ত্তে আনতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভরসার নাম ছিল মনোজ ভার্মা।
প্রথমে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে ডিআইজি পদমর্যাদা উত্তরণ। তারপর ২০১৭ সালে দার্জিলিঙের আইজি। সেইসময়ই গোর্খাদের আন্দোলনে উত্তাল ছিল পাহাড়। ক্রমে সেই পরিস্থিতি আয়তে এনেছিলেন এই আইপিএস। এর ঠিক দু বছর পর ফের সমতলে ফিরে আসা।
২০১৯ সালে বারাকপুরের পুলিশ কমিশনার হিসাবে নিয়োগ করা হয় মনোজ ভার্মা। রোজের বোমাবাজিতে তখন উত্তপ্ত ভাটপাড়া-সহ শিল্পাঞ্চলের একাধিক এলাকা। সেই পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে পথে নামেন তিনি। খালি হাতে অ্যাকশন করতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন। কিন্তু এই সমালোচনার কোনও জবাব দেননি। বরং কাজ করে এলাকা ঠান্ডা করে দেন এই সিনিয়র অফিসার।
একদা রাজ্যের এডিটি আইন-শৃঙ্খলার মুকুটে রয়েছে ২০১৭ সালে রাজ্য সরকারের পুলিশ পদক পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর পুলিশ পদক। মূলত, ভাটপাড়ায় শান্তি ও স্বাভাবিকতা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিলেন বলেই মনোজকে ওই পদক দেওয়া হয়েছিল। এবার তাঁর চ্যালেঞ্জ আরজি করের ঘটনার পর উত্তাল কলকাতাতে ফের স্বাভাবিক করা।