দেখতে দেখতে প্রায় ৯০ দিন কেটে গেল আরজি করের ঘটনা। এই ঘটনার তদন্তভার নিয়ে এখনও পর্যন্ত কী করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ? সাধারণ মানুষের সঙ্গে এবার এই প্রশ্ন আন্দোলনকারী ডাক্তারদের মনেও। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি করের তদন্ত করছে সিবিআই। এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে ১০ দফা দাবি রাখলেন প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তাররা।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার সঞ্জয় রায়। সেটাও কলকাতা পুলিশের অবদান। তবুও, নির্যাতিতার পরিবার আস্থা রেখেছে সিবিআইয়ের উপরে। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপর চাপ তৈরি করতেই এবার তাদের দিকেই দাবির বাণ ছুড়লেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
আরজি করের ঘটনার ময়নাতদন্তে নির্যাতিতার দেহে তরলের উল্লেখ করা হয়েছিল। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রশ্ন, তার কি পরীক্ষা হয়েছে ? হলে, তার রিপোর্ট কোথায় ? চার্জশিটে কেন লালারসের নমুনার উল্লেখ নেই ? প্রশ্ন করা হয়েছে, কেন নমুনা সংগ্রহ করার পর দেরিতে তা ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হল ?
ঘটনার দিনই কলকাতা পুলিশের বারাক থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল আরজি করের ধৃত সঞ্জয় রায়কে। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রশ্ন, তাহলে কেন, অভিযুক্তকে গ্রেফতারের ৭২ ঘণ্টা পরে, তার বারাক থেকে রক্তমাখা পোশাক উদ্ধার করা হল ? ময়নাতদন্তে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে নির্যাতিতার শরীরে ক্ষতচিহ্নের। সেই নমুনা চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়নি বলেই অভিযোগ জুনিয়র ডাক্তারদের।
গত ৯ অগাস্ট আরজি করের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল সঞ্জয় রায়কে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এফআইআরের আগে তাকে কী ভাবে গ্রেফতার করা হল, সেই প্রশ্নটাই নিজেদের দাবির মধ্যেও উল্লেখ করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। একসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়েছে, হাসপাতালের ঘটনা ঘটনার পর পুলিশ বারাক পর্যন্ত, মাঝের ২৭ মিনিট কোথায় ছিলেন অভিযুক্ত, কেন সেই সময় চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়নি ?
জুনিয়র ডাক্তারদের আরও দাবি, আরজি করের ঘটনার কথা জানত টালা থানা। অভিযোগ, সেই কথাও উল্লেখ নেই সিবিআইয়ের চার্জশিটে। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, ঘটনার সময় অভিযুক্তের সঙ্গে একটি ইয়ারপ্লাগ ছিল। যা ধরা পড়েছিল সিসি ক্যামেরার ফুটেজে। তার কোনও কথাই সিবিআইয়ের চার্জশিটে উল্লেখ নেই বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, চার্জশিটে ঘটনার বিবরণী নিয়েও। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রশ্ন, ঘটনা ঘটল হাসপাতালে, কিন্তু কেন নির্যাতিতার পরিবারকে এফআইআর করতে হল ? কেন উল্লেখ করা হল না, হাসপাতালে আসার পর কী করল নির্যাতিতার পরিবার ?
রাজনৈতিক মহল দাবি, ঠিক যে কায়দায় রাজ্যে উপর চাপ তৈরি করা হয়েছিল। সেই একই কায়দায় এবার সিবিআইয়ের উপর চাপ তৈরি করতে চাইছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কারণ, তাঁরাও বুঝতে পারছেন, সময় বয়ে যাচ্ছে, নির্যাতিতার বিচার এখনও অধরাই থেকে যাচ্ছে।