RG কর ইস্যুতে জট ছাড়ল না। সোমবার স্বাস্থ্যভবনে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক হয়। সরকারের সঙ্গে চিকিৎসক সংগঠনের বৈঠকও কার্যত নিস্ফলা। বৈঠক শেষে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানিয়েছেন, দশ দফা দাবির মধ্যে এমন তিনটি এমন দাবি রয়েছে যা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে শেষ করা যায় না। তার জন্যও পরিবেশ ও পরিস্থিতির উপরেই নির্ভর করতে হয়। জুনিয়র ডাক্তারদের মতো ডাক্তারি সংগঠনগুলিরও এই একই জায়গায় প্রশ্ন। তবে, বাকি ৭ দফা দাবিতে বৈঠক যে ইতিবাচক তা সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছে। একই সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের দ্রুত অনশন প্রত্যাহারের ফের আরজি জানাল নবান্ন। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, যেভাবে অনশনরত চিকিৎসকরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তাতে উদ্বিগ্ন রাজ্য।
বৈঠক শুরুতেই চিকিৎসক সংগঠনগুলির তরফে প্রশ্ন তোলা হয় কেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম ওই বৈঠকে অনুপস্থিত? এবিষয়ে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, বিশেষ কাজে তিনি দিল্লিতে রয়েছেন সেই কারণে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি। স্বাস্থ্যসচিবকে ওই বৈঠকে না রাখায় চিকিৎসক সংগঠনগুলি বেশ অক্ষুন্ন হয়েছেন বলে নিজেদের বক্তব্যে স্পষ্ট করেছে তারা।
বৈঠকে উপস্থিতি সিনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য ওয়াকিবহাল। কিন্তু সরকার কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই বৈঠক করল। জানানো হয়েছে, জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ দফা দাবি পূরণে কোনও লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। তবে রাজ্য সরকারের তরফে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সব অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন। কিন্তু কতদিনের মধ্যে সেই সমস্যাগুলির সমাধান হবে তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি।
বৈঠক শেষে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানিয়েছেন, জুনিয়র ডাক্তারদের যে ১০ দফা দাবি ছিল তার মধ্যে ৭টি দাবি মিটিয়ে দিতে স্বচেষ্ট রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে বাকি ৩ দফা দাবি নিয়ে কোনও সময়সীমা দেওয়া হয়নি রাজ্যের তরফে।
সূত্রের খবর, ইস্তফা নিয়ে বৈঠকে রাজ্য সরকারকে পালটা চাপ দিয়েছে চিকিৎসক সংগঠনগুলি। চিকিৎসকদের তরফে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পদত্যাগের প্রোফার্মা তৈরি করুক রাজ্য সরকার। কারণ যাঁরা গণইস্তফায় সই করেছেন তাঁরা প্রত্যেকেই ব্যক্তিগতভাবে ইস্তফা দিতে প্রস্তুত।
শুধু বৈঠক নয়, আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার দ্রোহের কার্নিভালে যোগ দেওয়ার জন্য মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সিনিয়র ডাক্তাররা। বৈঠকে উপস্থিতি সিনিয়র চিকিৎসকদের একজন জানিয়েছেন, আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন ওঁরা। তাঁদের উপস্থিতির জন্য অপেক্ষায় থাকবেন চিকিৎসকরা। এই বিষয়ে মনোজ পন্থ জানিয়েছেন, রবিবার জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে একটি মেল পাঠিয়ে ওই কর্মসূচি প্রত্যাহার করার আবেদন জানানো হয়েছে। এবিষয়ে আয়োজকরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন বলে আশাবাদী তিনি।
থ্রেট কালচার নিয়েও ওই বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে চিকিৎসকদের তরফে। তাঁদের অভিযোগ, যাঁরা থ্রেট কালচারে যুক্ত তাঁরাই স্বাস্থ্য প্রশাসনের বিভিন্ন পদে রয়েছেন। এরপরেও পরিস্থিতি কীভাবে ফেরানো সম্ভব সেই নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।