মা ঠাকুমাদের হাঁড়ি আগলে বসে থাকা, একসঙ্গে পাত পেড়ে বসে বাড়ির সকলের সঙ্গে জমিয়ে খাওয়া দাওয়া করা-এই চিত্র আর দেখা যায় না সচরাচর। বরং রান্নাঘরের ডাস্টবিনে জমে একের পর এক সাদা কালো প্লাস্টিকের খাবারের কৌটো। একটা ক্লিক, ঝড় বৃষ্টি বাদল মাথায় করে যখন খুশি যা খুশি খাবার পৌঁছে যাচ্ছে আপনার দোরগোড়ায়। তাতে না থাকছে খাওয়ার কোনও নির্দিষ্ট সময়, না থাকছে বাড়ির সেই স্বাদ।
এমনই এক বাস্তব বিষয়কে মণ্ডপবন্দী করেছে নাকতলা উদয়ন। প্রতিমার হাতে ফুটন্ত ভাতের হাঁড়ি। যেন বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডকে অন্ন জোগাচ্ছেন তিনি। গোটা মণ্ডপ সজ্জায় দেখানো হয়েছে এলাকার গুগল ম্যাপ, সঙ্গে কাছাকাছি রেস্তোরাঁগুলিও। ট্রাফিক, উড়ালপুল আর বড় বড় অট্টালিকার মাঝে ছুটে চলেছে সারি সারি সাইকেল বাইক।
৩০ মিনিটে মনপসন্দ খাবার পৌঁছে যাচ্ছে। কোথাও গিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে পুরনো সেই রান্নার স্বাদ। বরং কম্বো নির্ভর দুনিয়ায় কোথাও গিয়ে মলিন হয়ে যাচ্ছে ধোঁয়া ওঠা ভাতের গন্ধ। হারিয়ে যাচ্ছে একান্নবর্তী পরিবারের খেতে বসে আলাপ আলোচনা। এই অনন্য থিম একটিবার আপনাকে ভাবাবেই, এ হলফ করে বলাই যায়।
নাকতলা উদয়ন সংঘের পুজো মানেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এই বাইনারি ভেঙে গিয়েছে গত কয়েক বছর ধরেই। পরিস্থিতি তিন চর ধরেই আলাদা। তবুও প্রতিবছর ভিড় উপচে পড়ে এই পুজোয়। নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছেন পার্থ। অন্যান্য বছরের মতো এ বছরের উদ্বোধনে দেখা গেল না মুখ্যমন্ত্রীকেও। দ্বিতীয় থেকেই জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে তবু পুজোর প্রধান উদ্যোক্তার অনুপস্থিতিও দমাতে পারছে না নাকতলা উদয়ন সংঘকে। অন্য বছরের মতো এবারও ভিড়ে ভাসবে মণ্ডপ, এমনটাই আশা আয়োজকদের।