রাজ্যে ফের ভোট-পক্ষ। উপ-নির্বাচন হবে বকেয়া থাকা রাজ্যের ছটি বিধানসভায়। গতবার, ২০২১ সালে এই ছটি কেন্দ্রের পাঁচটিতে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য জয় ছিল উত্তরবঙ্গের সিতাই কেন্দ্রে। একমাত্র মাদারিহাট আসনে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির মনোজ টিগ্গা।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এখনও পর্যন্ত ভোটের হাওয়া নেই রাজ্যে। দেবীপক্ষের আবহে এখনও সেভাবে নেতা-নেত্রীদের প্রচারের আসরে দেখা যায়নি। কিন্তু নৈহাটিতে তাদের প্রার্থীর হয়ে প্রচারে কলকাতা ময়দানের তিন প্রধানকে একজোট করে ভোটের হাওয়া গরম করছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস। এছাড়াও, রাজনৈতিক মহলের দাবি, এবারের এই উপ-নির্বাচন বেশ কিছু কারণে বাকি ভোটের থেকে একেবারেই আলাদা।
রাজনৈতিক মহলের মতে, অনেক বছর পর রাজ্যে এবার লড়াই চতুর্মুখী। বাংলায় এই প্রথম ভোটে বামেদের সঙ্গী নকশালরা। জোটেই আছে আইএসএফ। অধীর চৌধুরী চলে যেতেই রাজ্যে বদলে গিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের নীতি। শুভঙ্কর সরকারের আমলে সাহস দেখিয়ে ছটি কেন্দ্রে একাই লড়বে কংগ্রেস।
সর্বপরি রয়েছে আরজি করের পটভূমি। ভোটে এই ইস্যুকে করতে মরিয়া এখন বিরোধীরা। অতীত বলছে, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগে উপ-নির্বাচনেই তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম ফোঁস করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। মূলত, নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুর আন্দোলনকে হাতিয়ার করে সেবার রাজ্যের তিন আসনের উপ-নির্বাচনে ঘাস-ফুল ফুটিয়ে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি কর আন্দোলন কি বিরোধীদের সেই অক্সিজেন দিতে পারবে ? প্রশ্ন বঙ্গের নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের।
নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের দিনেই তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ দাবি করেছিলেন, চার শূন্যের পর এবার ছয় শূন্য হবে। এই উপ-নির্বাচনে আরজি করের কোনও প্রভাব পড়বে না। কুণালের এই দাবিকে উড়িয়ে বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা সৌমিক লাহিড়ির পাল্টা উত্তর ছিল, এই উপ-নির্বাচন থেকেই তৃণমূলের শেষের শুরু হবে। বামেরা খাতা খুলবে এই উপ-নির্বাচন থেকে।
এটা ঠিক যে, রাজ্যে গত কয়েকটি নির্বাচনে ভোট বেড়েছে বামেদের। ভোট কমেছে বিজেপির। আর সেটাই আশা বামেদের। কিন্তু কলকাতার বাইরে আরজি করের প্রভাব কতটা ? এই প্রশ্নটাই আসলে ভাবাচ্ছে বাম এবং বিজেপিকে। ভৌগলিক ভাবে উপ-নির্বাচন হচ্ছে উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ এবং পশ্চিমাঞ্চলের জেলায়।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়ি ছাড়া আরজি কর আন্দোলনের তেমন কোনও প্রভাব নেই। পশ্চিমাঞ্চলে ভোট হচ্ছে বাঁকুড়া এবং মেদিনীপুরে। আরজি করকে সামনে রেখে মেদিনীপুরে রাস্তায় নেমেছিল বিজেপি। কিন্তু তা দানা বাঁধেনি। তবে, নজর থাকবে উত্তর ২৪ পরগনার দুই কেন্দ্র নৈহাটি এবং হাড়োয়ার উপরে। রাজনৈতিক মহল দেখতে চায় ২০২৬ বিধানসভা ভোটের আগে কলকাতা সংলগ্ন এই দুটি কেন্দ্রে আরজি করের প্রভাব থাকে কীনা।