রাজনৈতিক বিশ্লেষক। কর্মক্ষেত্রে যাঁর অভিজ্ঞতা চার থেকে আট বছর। রাজনৈতিক ইনর্টান। কর্মক্ষেত্রে যিনি কাজ করেছেন কমপক্ষে তিন বছর। কনটেন্ট রাইটার, যাঁর গণমাধ্যম সম্পর্কে লেখাপড়া এবং অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং যিনি পাঁচ বছর কাজ করেছেন। গ্রাফিক্স ডিজাইনার, অভিজ্ঞতা হতে হবে দুই থেকে সাত বছর। ডিজিট্যাল মার্কেটিং এগজিকিউটিভ, যিনি পাঁচ বছরের বেশি সময় দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন।
না কোনও কর্পোরেট কোম্পানি নয়। এই বিজ্ঞাপন ২০২৬ বিধানসভা ভোটের আগে পেশাদার সিপিএমের। হ্যাঁ, নিজের ফেসবুক থেকেই এই বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে এমনটাই দাবি করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। শুদ্ধিকরণ, একসময়ে সিপিএমের অন্দরে এই বার্তাই দিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর এই বার্তায় একসময় দলের অন্দরে বির্তক তৈরি হয়েছিল।
কিন্তু গত কয়েকটি ভোটের ফল বিশ্লেষণের পর দলের অন্দরেই সিপিএম নেতারা স্বীকার করেছেন, এখনই এমন কিছু প্রয়োজন, যা আধুনিক এবং এই প্রজন্মের কাছে গ্রহণ যোগ্য। তাঁর রাজনৈতিক গুরু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পথ অনুসরণ করে এবার সিপিএমের অন্দরে আমূল পরিবর্তন চান সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের চেয়ারে বসার পর সিপিএমকে প্রথম সমাজমাধ্যম মুখী করেছিলেন মহম্মদ সেলিম। যার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল গত লোকসভা ভোটে বহরমপুরে। নিজের কেন্দ্রে ওয়াররুম তৈরি করেছিলেন মহম্মদ সেলিম। সেই ঘরে বসেই ভোটের রিমোট কন্ট্রোল করেছিলেন বাম কর্মী-সমর্থকরা। সেলিম হেরে গিয়েছিলেন ঠিক কথা, কিন্তু বঙ্গ রাজনীতিতে একটা নতুন ছবি দেখেছিল সিপিএম।
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্য সম্পাদক হওয়ার পর আগের থেকে যুব এবং ছাত্র সংগঠনকে অনেক বেশি সক্রিয় করেছেন মহম্মদ সেলিম। রাজনৈতিক মহল যার প্রভাবও দেখতে পারছে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে ফের পথে নামছেন বাম কর্মী, সমর্থকরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক পদে কী এবার প্রশান্ত কিশোর ধাঁচের কেউ ? সুস্পষ্ট নয় এই ব্যাপারে মহম্মদ সেলিমের দাবি। তবে তিনি জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে এমন কিছু করতে হবে, যা বাংলার মানুষের কাছে ফের সিপিএমকে গ্রহণ যোগ্য করে তুলবে। তাই এবার পেশাদার সিপিএম।
অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই, অতীতে রাজ্যের ভোট ময়দানে ম্যাজিকের মতো কাজ করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোরের জুটি। বিশেষ করে ২০১৯ পরবর্তী লোকসভা ভোটের পর থেকে পিকের পরামর্শেই এগিয়েছে তৃণমূল। গত বিধানসভা ভোটে প্রশান্তের পরামর্শেই উন্নয়নে কল্পতরু হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। রাজনৈতিক মহলের দাবি, সেই কারণে বাংলা তার মেয়েকেই নবান্নে ফিরিয়ে এনেছিল।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, ডিজিট্যাল থেকে প্রফেশনাল হওয়ার সিপিএমের এই সিদ্ধান্ত বেশ গঠনমূলক। এই ব্যাপারে আশা দেখছেন সিপিএম নেতারাও। কারণ, তাঁরা বুঝে গিয়েছেন রাজ্যে অধীর যুগের ইতি টেনে দিয়েছেন রাহুল গান্ধীরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হয়েই আলিমুদ্দিনের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন শুভঙ্কর সরকার। তাই রাজ্যে শূন্যের গেরো কাটাতে সত্যিই নতুন কিছু চায় সিপিএম। অস্ত্র হতে পারে পেশাদার সিপিএমের ট্যাগ।