বর্ষা ছিল তাঁর প্রিয় ঋতু । কিন্তু, এই বর্ষাতেই গোটা দেশবাসীকে নিঃস্ব ঋক্ত করে চলে গিয়েছিলেন । আজ, ২২ শ্রাবণ সেই দিন, যেদিন রবি-হারা হয়েছিল বাংলা । বিশ্ব হারিয়েছিল প্রিয় কবিকে, ঔপ্যনাসিককে, নাট্যকারকে, ছোটগল্পকার-কে...সর্বোপরি সাহিত্যজগৎ হারিয়েছিল এক অভিভাবককে । তবে, তাঁর কালজয়ী সৃষ্টি ছড়িয়ে সর্বত্র । আজ মন খারাপের দিনে, শুধু দেশ নয় বিশ্বজুড়ে কখনও গানে, কখনও কবিতায় কিংবা নাটকের মধ্যে দিয়ে রবি ঠাকুরকে স্মরণ করছেন বাঙালি ।
তবে, রবি ঠাকুরের নামের পাশে কবি, ঔপনাসিক ছাড়া আরও একটা বিশেষণ যদি যোগ করা যায়, সেটা হল ভোজনরসিক । খেতে ভালবাসতেন তিনি । আরও খাওয়াতেও । জীবনের বেশিরভাগ সময় দেশে -বিদেশে কেটেছে তাঁর। সেই সময় বিশেষ বিশেষ খাবারের প্রতি তাঁর আগ্রহ জন্মেছিল । সেই রান্নার স্বাদ ঠাকুর বাড়িতেও এনেছিলেন তিনি ।
খাদ্যরসিক রবি ঠাকুর সকলকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতে ভালবাসতেন । ঠাকুরবাড়িতে প্রায়ই খাওয়া-দাওয়া লেগেই থাকত । আর নিজে খাবারের পদ নির্বাচন করতেন তিনি । মৃণালিনী দেবীর হাতের রান্না ছিল তাঁর বড় প্রিয় ।
কী কী খেতে ভালবাসতেন ?
আম ছিল তাঁর বড় প্রিয় । এমনও হয়েছে, জাপান, আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশে যাওয়ার সময় আমও সঙ্গে নিয়ে যেতেন । এছাড়া রবি ঠাকুরের প্রিয় পদের তালিকায় রয়েছে চালতা দিয়ে মুগ ডাল, কাঁচা ইলিশের ঝোল, নারকেল চিংড়ি, চিতল মাছ, পাঁঠার মাংস, কাবাব ও বিভিন্ন ধরনের পানীয় ।
শুধু খাওয়া-দাওয়া নয়, তার পরিবেশন, খাবার পাত্র...সব দিকেই নজর থাকত রবীন্দ্রনাথের । ছেলে রথীন্দ্রনাথের কথায়, 'বাবা মনে করতেন খাওয়াটা উপলক্ষ মাত্র, রান্না ভালো হলেই হল না— খাবার পাত্র, পরিবেশনের প্রণালী, ঘর সাজানো, সবই সুন্দর হওয়া চাই।'
রবি ঠাকুর সম্পর্কে অজানা তথ্য
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছদ্মনাম সকলেরই জানা । তবে, তিনি ভানুসিংহ, আন্নকালী পাকড়াশী, অকপটচন্দ্র লস্কর ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন । সেগুলি হল নবীন কিশোর শর্মণ, বাণীবিনোদ বিদ্যাবিনোদ, শ্রীমতী কনিষ্ঠা, শ্রীমতী মধ্যমা ।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় বিশ্বাসী ছিলেন । নিজের জমিদারির প্রজাদের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পরিষেবা দিয়েছেন। নিজেও এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিতে পছন্দ করতেন।
বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর গান রচনার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বরাবর উৎসাহ দিতেন । একবার গান রচনার জন্য বাবার থেকে ৫০০ টাকার চেক উপহার পেয়েছিলেন তিনি ।