আরজি কর কাণ্ডে উত্তাল গোটা বাংলা। ১৪ অগাস্ট মধ্যরাতে শহরজুড়ে যখন চলছে 'মেয়েদের রাত দখল', তখনই হাসপাতালে ভাঙচুর চালাল একদল দুষ্কৃতী। ঘটনায় অভিযুক্ত কয়েক জনের ছবি প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘সন্ধান চাই’ বিজ্ঞপ্তি জারি কলকাতা পুলিশের! বৃহস্পতিবার কলকাতার ফেসবুকের পেজ থেকে খান ষাটেক ছবি প্রকাশ করে বেশ কয়েক জন পুরুষ ও মহিলাকে চিহ্নিত করে তাঁদের সন্ধান চেয়েছে পুলিশ।
ছবিতে লাল দাগ দিয়ে চিহ্নিত করা মুখেদের খোঁজ থাকলে থানায় অথবা ওই পেজেই সরাসরি যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
ডিউটিরত মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদ কর্মসূচির মধ্যেই বুধবার রাতে আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতীরা। ভাঙচুর করা হয় আরজি করের পুলিশ ফাঁড়ি, এমনকি আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের মঞ্চও!
তাণ্ডবের প্রথম ত্রিশ মিনিট, দাঁড়িয়ে দেখার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছয়। নামানো হয় র্যাফ। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করা হয়। হামলায় আহত হন বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মীও। রাত বাড়লে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। হামলাকারীদের ছোড়া ইটে মানিকতলা থানার ওসি জখম হন। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি বলেন, ‘‘এটা আমার কাজের অংশ। কিন্তু প্রতিবাদের নামে সাধারণ মানুষ, ছাত্রছাত্রীদের আঘাত করা হয়েছে।’’
আরজি করে তাণ্ডবের ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়, হাসপাতালের চার তলার সেমনার রুমে, যেখানে অপরাধ ঘটেছিল, সেখানেই ভাঙচুর চালানো হয়েছে। সেই দাবি ভুয়ো বলে পুলিশ জানিয়েছে। জানানো হয়েছে, সেমিনার রুম ‘অক্ষত’ রয়েছে। গুজব এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য আইনি পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি লালবাজার।
৯ অগাস্ট, আরজি করের ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই অবশ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দল এবং সাধারণ মানুষ। ১২ তারিখ নির্যাতিতার বাড়িতে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই জানান, ছ'দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১৮ অগাস্টের মধ্যে কলকাতা পুলিশ ঘটনার তদন্ত করতে না পারলে তদন্ত ভার দিয়ে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-কে। কিন্তু ১৩ তারিখ বিকেলেই হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআই-কে দেওয়া হয়। তদন্ত সংক্রান্ত সমস্ত নথি কলকাতা পুলিশের তরফে সিবিআই আধিকারিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।