শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত । মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন । কিন্তু, প্রতিবাদ করতে গিয়ে যে এমন বর্বরতার সাক্ষ্মী থাকতে হবে, ভাবতে পারেননি নায়িকা । চেনা কলকাতাকে বড্ড অচেনা লেগেছে ঋতুপর্ণার । এত আক্রোশ, এত রাগ কেন ? তিনি তো একজন মানুষ হিসেবেই প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন । আর সবার মতোই তিনিও সুবিচার চেয়েছেন । এতে অপরাধটা কোথায় ? প্রশ্ন তুলেছেন ঋতুপর্ণা । উল্লেখ্য, আর জি করের ঘটনায় প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন অভিনেত্রী । তাঁকে ঘিরে গো-ব্যাক স্লোগানও ওঠে । এই ঘটনায় মুখ খুলেছেন ঋতুপর্ণা । আনন্দবাজার অনলাইনকে ঘটনার বিবরণ দিয়ে নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ঋতু ।
ঋতুপর্ণা আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, তিনি এই ঘটনায় লজ্জিত, আহত, কম্পিত । সকলের সঙ্গে রাত জাগতে গিয়েছিলেন । কিন্তু, এমন অসভ্যতা, এমন ঘটনা ঘটবে, কল্পনা করতে পারেননি । বুধবার রাতে তাঁর প্রাণটাও চলে যেতে পারত । ঋতুপর্ণার কথায়, 'কিছু মানুষ প্রতিবাদের কথা মাথায় না রেখে, হুজুগে চলে গিয়েছিলেন জমায়েতে । আসলে যাঁরা এটা করলেন তাঁদের মুখ্য উদ্দেশ্য আন্দোলন করা নয়। একজন তারকাকে হেনস্থা করা।'
ঠিক কী ঘটেছিল অভিনেত্রীর সঙ্গে ?
ঋতুপর্ণা আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, ৪ সেপ্টেম্বর শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ের প্রতিবাদী জমায়েতে উপস্থিত হয়েছিলেন । ভেবেছিলেন, এত মানুষের প্রতিবাদ বৃথা যাবে না। কিন্তু, কিছু ক্ষণের মধ্যেই বদলে গেল ছবিটা। আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন । তাঁর উদ্দেশে 'গো ব্যাক' স্লোগান দিতে শুরু করেন অনেকে। চার পাশ থেকে উলুধ্বনি এবং শঙ্খ বাজিয়ে ব্যঙ্গ করা হচ্ছিল । বিরাট সংখ্যক মদ্যপ এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ । ঋতুপর্ণা জানিয়েছেন, আচমকাই একটা জনস্রোত ধাক্কা দিতে শুরু করে। এত চিৎকার হচ্ছিল যে, কারও কোনও কথা শুনতে পাচ্ছিলেন না । সবাই চিৎকার করছিলেন । কেউ কোনও কথা শুনলেন না । গাড়িতে জুতো ছোড়া হল। হাত দিয়ে মেরে মেরেই তুবড়ে দিয়েছেন গাড়িটা । ভিড়ের মাঝে ‘চটিচাটা’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ।
ঋতুপর্ণার প্রশ্ন, তাঁর অপরাধ কী ? তিনি তো রাজনীতি করেন না । তাহলে, একটা মেয়ের জন্য তাঁর সমবেদনা জানানো কি অপরাধ ? সেই একটা মেয়েকে হেনস্থা করা হল কেন ?