শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন রূপঙ্কর বাগচী (Rupankar Bagchi)। তাঁর কথা বুঝতে ভুল হয়েছে। এদিন প্রেসক্লাবে এসে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন রূপঙ্কর।
এদিন রূপঙ্কর বাগচী বলেন, "প্রথমেই প্রয়াত কেকে-র (KK's Death) পরিবারের কাছে নিঃশর্ত দুঃখ প্রকাশ করছি। আমার যে ভিডিওটি গত ক'দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়া ও তার বাইরে এত বিরামহীন উত্তেজনার উপাদান হয়েছে এখানে পৌঁছবার আগে সেটি আমি ফেসবুক থেকে ডিলিট করলাম। পরলোকগত গায়কের পরিবারের কারও সঙ্গে আমার পরিচয় নেই। কিন্তু আপনাদের মাধ্যমে মুম্বইবাসী তাঁদের আবার জানাচ্ছি যে আমি আন্তরিক দুঃখিত। কেকে আজ যেখানেই থাকুন ,ঈশ্বর যেন ওকে শান্তিতে রাখেন।"
এদিন রূপঙ্কর বলেন, "আমার সংগীত জীবনে এইরকম বিভীষিকার মুখোমুখি হতে হবে ভাবিনি। যেখানে ওড়িশায় বসে করা একটা ভিডিও পোস্ট এমন পরিস্থিতি তৈরি করবে যা আমার গোটা পরিবারকে ঠেলে দেবে চরম আতঙ্ক ,দুৰ্ভাবনা এবং মানসিক নিপীড়নের মধ্যে। যেখানে আমার বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা রক্ষায় পাহারা দেবে টালা থানার পুলিশ। নিয়ত হুমকি এসেই যাবে আমার স্ত্রী-র ফোনে। গায়ক হিসেবে দেশে-বিদেশে এত লক্ষ লক্ষ মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। তাদের আবেগ অনুভব করেছি এত বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে। স্বীকৃতি পেয়েছি নানা স্তরে। মুহূর্তের অসতর্কতা যে এমন গনগনে এবং মারমুখী আবেগ বয়ে আনবে কে জানতো ? এত ঘৃণা। এত আক্রোশ। এত বিরুদ্ধতা -কিন্তু অনেকটাই তৈরি হল আমার বক্তব্য আমি ঠিকমতো গুছিয়ে বলতে না পারায়।"
আরও পড়ুন: রূপঙ্করের মন্তব্যকে সমর্থন করি না, ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য 'মিও আমোরে'র
হু ইজ কেকে-এই মন্তব্য নিয়ে রূপঙ্কর বলেন, "প্রয়াত কেকে সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত কোনো বিদ্বেষ নেই। থাকার প্রশ্নও ওঠে না। আমি শুধু ওর কনসার্ট নিয়ে তৈরি হওয়া উন্মাদনা লক্ষ্য করে বলতে চেয়েছিলাম বাঙালি গায়কদের জন্যও আপনারা একইরকম দরদ দেখান। ব্যক্তিগত ভাবে ঈশ্বরের আশীর্বাদে এবং আপনাদের শুভেচ্ছায় গায়ক হিসেবে আমার ব্যক্তিগত কোনো হতাশা নেই। কিন্তু বাঙ্গালি গায়ক হিসেবে সমষ্টিগত বিপন্নতা রয়েছে। ইদানিং আরও বেশি করে বারবার মনে হয় দক্ষিণ বা পশ্চিম ভারত যেভাবে তার শিল্পীদের স্বার্থরক্ষার্থে ঝাঁপিয়ে পড়ে ,আমরা যেন সেটা করতে দ্বিধাগ্রস্ত। শিল্প, সাহিত্য,সংগীত সবেতেই প্রাদেশিক পারফর্মার যেন কঠিন খাদের ধারে এক অস্তিত্বের সংকটে দাঁড়িয়ে। তাই আমি একার কথা বলতে চাইনি।একটা সমষ্টির কথা বলতে চেয়েছিলাম।"
সংবাদমাধ্যমের সামনে রূপঙ্কর বাগচী বলেন, "একই সঙ্গে তাই আরও কিছু সমযোদ্ধার নাম করেছিলাম যাদের ট্যালেন্ট আমার মতে জাতীয় পর্যায়ের। পরে মনে হয়েছে নামগুলো বলার আগে জিজ্ঞেস করে নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আবার বলি এককভাবে ইস্যুটা দেখিনি। কেকে-র মতো ভারতবিখ্যাত পারফর্মারের নামটা নিছক প্রতীক ছিল। নিছক উপলক্ষ্য । লক্ষ্য কখনো তিনি ছিলেন না। থাকার প্রশ্নও নেই।"
রূপঙ্কর বাগচী বলেন, "কে জানত, চরম দুর্ভাগ্য কেকে-র জন্য এইভাবে ওঁৎ পেতে রয়েছে। একজন প্রথিতযশা শিল্পী কলকাতার মঞ্চে গাইতে এসে এভাবে প্রাণ হারালেন সেটা খুব হৃদয় বিদারক। আমি আজ আপনাদের কারো সঙ্গে আলাদা করে কথা বলছি না। পরে নিশ্চয়ই বলব। কিন্তু আজ সেই দিন নয়। আপনাদের কাছে মার্জনা চাইছি আগাম।"