বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ । বছরজুড়ে একের পর এক উৎসব লেগেই রয়েছে । মার্চে গিয়েছে দোল, জুলাই মাসে রথযাত্রা,অগাস্টে রাখি । এদিকে, বাঙালির সবথেকে বড় উৎসবের দুর্গাপুজোর দিনও এগিয়ে আসছে । গনেশ পুজো, বিশ্বকর্মা পুজোর পরই শারদোৎসবের ঢাকে কাঠি পড়ে যাবে । কুমোরটুলিতে ব্যস্ততা শুরু হয়ে গিয়েছে । বিভিন্ন পুজো মণ্ডপের থেকে বায়না আসা শুরু হয়েছে । এদিকে, প্যান্ডেল বাঁধার কাজও জোরকদমে চলছে । এরই মধ্যে পুজোর নির্ঘন্ট প্রকাশ করে দিল বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষ ।
দুর্গোপুজোর ৫ দিন বেলুড় মঠে ভক্তদের ভিড় হয় চোখে পড়ার মতো । বিশেষ করে অষ্টমীর দিন কুমারী পুজো দেখতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেলুড় মঠে ভিড় করেন দর্শনার্থীরা । এবারও প্রথা মেনে মহাসপ্তমী থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত ধূমধাম করে দুর্গাপুজো পালন করা হবে । ইতিমধ্যেই মণ্ডপ বাঁধার কাজ শুরু হয়েছে । প্রথা অনুসারে জন্মাষ্টমীর পুণ্যতিথিতে বেলুড় মঠে দেবীর কাঠামোপুজোর মধ্যে দিয়ে সূচনা হয় শারদোৎসবের ৷ বেলুড় মঠে পুজোর নির্ঘণ্ট দেখে নিন একনজরে
২২ আশ্বিন অর্থাৎ ৮ অক্টোবর মহাপঞ্চমী । মঙ্গলবার দেবীর বোধন হবে সন্ধে সাড়ে ৬টার সময়
২৩ আশ্বিন অর্থাৎ ৯ অক্টোবর, মহাষষ্ঠী । বুধবার ভোর সাড়ে ছটায় কল্পারম্ভ । সন্ধে সাড়ে ছটায় অনুষ্ঠিত হবে আমন্ত্রণ ও অধিবাস ।
২৪ আশ্বিন অর্থাৎ ১০ অক্টোবর মহাসপ্তমী । বৃহস্পতিবার, ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে মহাসপ্তমীর পুজো শুরু হবে
২৫ আশ্বিন অর্থাৎ ১১ অক্টোবর মহাষ্টমী । শুক্রবার, মহাষ্টমীর পুজো শুরু ভোর সাড়ে ৫টায় ।
কুমারী পুজো - সকাল ৯টা
সন্ধিপুজো - বেলা ১১টা ৪৩মিনিট থেকে ১২টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত
২৬ আশ্বিন অর্থাৎ ১২ অক্টোবর, মহানবমী । শনিবার, মহানবমীর পুজো শুরু ভোর সাড়ে ৫টা থেকে । সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে হোম অনুষ্ঠান পালিত হবে ।
২৭ আশ্বিন অর্থাৎ ১৩ অক্টোবর, বিজয়া দশমী । রবিবার দশমী পুজো শুরু ভোর সাড়ে ৬টা থেকে । বিসর্জনের সময় সন্ধে পৌনে ৭টা ।
বেলুড় মঠের তরফে জানানো হয়েছে, সপ্তমী থেকে নবমী, এই তিনদিন দেবীর ভোগারতির পর পুষ্পাঞ্জলি দিতে পারবেন দর্শনার্থীরা । এছাড়া তিনদিন শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের আরতির পর সন্ধ্যারতি সম্পন্ন হবে ।
প্রণামী পাঠাতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বেলুড় মঠের তরফ থেকে ।
যাঁরা প্রণামী পাঠাবেন, তাঁদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর-সহ প্যান কার্ড, আধার কার্ডের নম্বর উল্লেখ করতে হবে ৷ চেক অথবা ডিমান্ড ড্রাফ্টে প্রণামী পাঠালে তাতে 'রামকৃষ্ণ মঠ, বেলুড় মঠ' কথাটি উল্লেখ রাখতে হবে ৷ ডাক, রেজিস্টার পোস্ট বা কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠানো চিঠির সঙ্গে অর্থ না পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে । ডাক বিভাগের ইএমও পদ্ধতিতে প্রণামী পাঠালে কী উদ্দেশে তা পাঠানো হয়েছে তা 'পে ইন স্লিপ' ফর্মে প্রেরকের স্বাক্ষরের উপর লিখে জানাতে হবে । আর অনলাইনে প্রণামী পাঠানোর ঠিকানা হল https://donations.burmath.org
উল্লেখ্য, চলতি বছর, দেবী দুর্গার আগমন হচ্ছে দোলায় । শাস্ত্রমতে, দোলায় মায়ের আগমন মানে মড়ক । অর্থাৎ যার ফল শুভ নয়। দুর্ভোগ ও দুর্যোগের সম্ভাবনা থাকে ।
দেবীর কৈলাশে গমন হচ্ছে ঘোটকে । যার ফলও শুভ নয় । ছত্রভঙ্গ, ছন্নছাড়া, ধ্বংসাত্মক ফল হয় । অর্থাৎ শাস্ত্রমতে এবার দেবীর আগমন ও গমন...কোনওটাই শুভ নয় ।