আইনজীবীদের একাংশের বিক্ষোভে বুধবার উত্তাল হয়ে উঠল কলকাতা হাইকোর্ট চত্ত্বর। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস বয়কট করতে গিয়ে ১৭ নম্বর কোর্টের সামনে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের আইনজীবী সেলের সদস্যদের একাংশ। ঘেরাও করে রাখেন বিচারপতি কোর্টও। এমন কী ওই কোর্টের ভেতরে কোনো আইনজীবীকে প্রবেশ না করতে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এরপরই দফায় দফায় বিক্ষোভ, পাল্টা বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে আদালত চত্ত্বর।
বেনজির ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। মঙ্গলবার হাইকোর্ট চত্বরে ধুন্ধুমার বাঁধে। জানা গিয়েছে, একজন আইনজীবী (Advocate) অন্য পক্ষের সদস্যদের কামড়ে দেয়। এদিনের অশান্তির জেরে জখম হয়েছেন দু'জন আইনজীবী। হাইকোর্টের মেডিক্যাল ইউনিটের পক্ষ থেকে তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে পুলিশের সাহায্য চান একদল আইনজীবী। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব (Prakash Srivastav) এজলাসে ডেকে আনেন রেজিস্ট্রার জেনারেলকে। পরে প্রধান বিচারপতি বলেন,"হাইকোর্টের মধ্যে এমন ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।" বার অ্যাসোসিয়েশনের (Bar Association) আইনজীবী কল্লোল বসু বলেন, "বারের বৈঠক নিয়ে আদালতের কিছু করার নেই। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আদালত হস্তক্ষেপ করতেই পারে।" কিছুক্ষণ পর প্রধান বিচারপতি এজলাস ছেড়ে উঠে যান।
আরও পড়ুন: ডিভিশন বেঞ্চের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশে স্বস্তি, সিবিআই দফতরে যাচ্ছেন না পার্থ
সম্প্রতি, বিভিন্ন মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ রাজ্যের বিরুদ্ধে গিয়েছে। এর মধ্যে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠিও লিখেছেন তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা। সূত্রের খবর, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রস্তাব এনে তাঁর এজলাস বয়কটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠক হয় এদিন। এই বৈঠক ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান বারের সভাপতি অরুণাভ ঘোষ। জানান, "অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা বাতিল করা হল। উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় বৈঠক বাতিল করা হয়। তাই বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।"
তৃণমূল পন্থী আইনজীবী অচিন্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, নতুন করে সভা করে সর্বসম্মতিতে ওই এজলাস বয়কটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি কল্লোল মণ্ডল জানান, বার অ্যাসোসিয়েশন বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে কেউ যদি কোনও সিদ্ধান্ত নেয়, তা বার অ্য়াসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত নয়। মুষ্টিমেয় কিছু আইনজীবীর সিদ্ধান্ত। এরপরই তৃণমূল সমর্থিত আইনজীবীরা বার অ্য়াসোসিয়েশনের সভাপতি অরুনাভ ঘোষের পদত্যাগের দাবি তোলেন।