নবান্নের পর এবার কালীঘাট। রাজ্য বনাম জুনিয়র ডাক্তারদের শর্তের দড়ি টানাটানিতে আরজি কর বরফ গলল না। বরং আরও জটিল হল। শনিবার রাতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ফিরে জুনিয়র ডাক্তাররা ঘোষণা করলেন, নিজেদের পাঁচদফা দাবি উপর দাঁড়িয়ে আগামী দিনেও তাঁরা খোলা মনেই আলোচনা চান। কিন্তু স্বচ্ছিদা দেখা হবে রাজ্য সরকারকে। তাঁদের অভিযোগ, দেরির অজুহাত দিয়ে এদিনের বৈঠক ভেস্তে দিয়েছে রাজ্য। ফলে দরকার হলে আরও ৩৫ দিন তাঁরা রাস্তায় থাকবেন। কিন্তু ন্যায়বিচার নিয়ে ছাড়বেন।
গত ৯ অগাস্ট ধর্ষণ করে খুন করা হয় RG কর হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসককে। তারপরেই প্রকৃত অভিযুক্তদের গ্রেফতার এবং কড়া শাস্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রথমে RG কর হাসপাতালেই আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা।
খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতারির পাশাপাশি মোট ৫ দফা দাবি পূরণে কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের দাবি ছিল কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগ। এই দাবি পূরণে লালবাজারের অভিযান করেছিলেন তাঁরা। যদিও বাধা পেয়ে ফিয়ার্স লেনের কাছে ২২ ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। এরপর রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবের পদত্যাদের দাবিতে স্বাস্থ্যভবনের সামনে লাগাতার বিক্ষোভ করছেন তাঁরা।
শনিবার মুখ্যমন্ত্রী নিজে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের ধরনামঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি আন্দোলন তোলার আবেদন করার পাশাপাশি আলোচনারও প্রস্তাব দেন। সেইমতো কালীঘাটে হাজির হয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু সেখানেও ভেস্তে গেল বৈঠক। এবার কোন দিকে এগোবে আন্দোলন?
আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, দাবি না মেটা পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। অর্থাৎ এখনই যে তাঁরা স্বাস্থ্যভবনে বিক্ষোভ-ধর্না তুলে নেবেন না তা একপ্রকার স্পষ্ট।
অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, শনিবার মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন শেষ চেষ্টা করতে ধরনা মঞ্চে গিয়েছিলেন তিনি। অর্থাৎ এরপর আলোচনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কতটা আগ্রহ প্রকাশ করবেন সেনিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন উঠেই যাচ্ছে।
অন্য একটি অংশ মনে করছেন, এবার পুরোপুরি সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে থাকবে রাজ্য সরকার। কারণ গত শুনানিতেই কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু এখনও সেই নির্দেশ কার্যকর হয়নি। আগামী মঙ্গলবার ফের শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ওই শুনানির দিকেই তাকিয়ে সকলে। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে মঙ্গলবারের দিকেই তাকিয়ে সব পক্ষ। এবং তারপরেই আন্দোলনের ভাগ্য নির্ধারণ হতে পারে।