আর বিনা অনুমতিতে কলকাতার রাজপথে করা যাবে না মিটিং-মিছিল। আরজি কর মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণকে হাতিয়ার করে এবার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল লালবাজার। এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, পুজোর আগে শহরে মিটিং-মিছিল করতে হলে পুলিশের থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, আরজি কর আন্দোলন নিয়ে প্রতিনিয়ত কলকাতার রাজপথে হিমসিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। সেই চাপ কমাতেই এবার শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণকেই হাতিয়ার করলেন বিনীত গোয়েলরা।
আরজি কর মামলার গত শুনানিতে শীর্ষ আদালতের কাছে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবালের বক্তব্য ছিল, সুপ্রিম কোর্ট শান্তিপূর্ণ অবস্থানে হস্তক্ষেপ করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু রোজ পথ আটকালে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। তার পাল্টায় দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে সরকার এ বিষয়ে আইনমতো পদক্ষেপ করতে পারে। তাতে কোনও বাধা নেই। পুজোর আগে কলকাতার রাস্তাকে মিছিল-মুক্ত করতে সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণকেই এবার ঢাল হিসাবে সামনে তুলে ধরল কলকাতা পুলিশের সদর দফতর।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে গত ১৪ অগাস্ট কলকাতায় প্রথম রাত দখলের কর্মসূচি হয়েছিল। তারপর থেকে লাগাতার সাধারণ মানুষ এই ঘটনার বিচার চেয়ে পথে নেমেছেন। নেতাজি নগর, যাদবপুর, ধর্মতলা, বারাসত এবং নৈহাটি থেকে আন্দোলনকারীদের উপর হামলার অভিযোগও উঠেছে। যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে রাজ্য প্রশাসনের।
সোমবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আরজি করের ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদের পাশে রয়েছে সরকার। কিন্তু রোজ রোজ পথ আটকালে অনেক মানুষ রয়েছেন, যাঁরা অসুবিধার মধ্যে পড়েন। পুলিশের হাত শক্ত করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সামনে পুজো আসছে, তার আগে এ ভাবে রাত পাহারা দেওয়া পুলিশের কাজ নয়। কারণ, পুজোকে ঘিরেও নিরাপত্তার অনেক কাজ থাকে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, প্রথমে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ এবং তারপরে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা পুজোর আগে কলকাতা পুলিশকে নতুন বল দিল।
তাই লালবাজার থেকে বিনীত গোয়েলদের নির্দেশ, এবার থেকে রাস্তায় মিছিল মিটিং করতে হলে, কলকাতা পুলিশের থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি না নিলে সেই কর্মসূচিতে বেআইনি বলেই ধরা হবে।