বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আর কোনও প্রাক্তন রইলেন না। শেষবারের মতো আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে বেরিয়ে গেলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। লাখো মানুষের ভিড়ে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু রোড ধরে এগিয়ে চলল তাঁর অন্তিম যাত্রা। পিছনে রয়ে গেল অনেক স্মৃতি, অনেক স্বপ্ন, অনেক ইতিহাস। যা দলিল হয়ে রইল আগামী প্রজন্মের কাছে।
শুক্রবার সকালে তপসিয়ার পিস ওয়ার্ল্ড থেকে শুরু হয়েছিল প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শেষ যাত্রা। যাত্রা শুরুর আগেই সিপিএম নেতাদের দাবি ছিল, গান স্যালুট নয়, মানুষের স্যালুটেই তিনি এগিয়ে যাবেন। দিনের শেষে এজেসি বোস রোডে এই ছবিই প্রতিফলিত হল।
সিপিএমের রাজ্য সদর দফর থেকে বেরিয়ে তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হবে ভারতের যুব ফেডারেশনের রাজ্য সদর দফতর দীনেশ মজুমদার ভবনে। যে ভবন থেকে শুরু হয়েছিল তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি। কিন্তু ভিড়ের চাপে তা সম্ভব হয়নি। বরং শেষ যাত্রা এগিয়ে গিয়েছে নীলরতন সরকার হাসপাতালের দিকে।
রাজ্য বিধানসভায় এদিন বুদ্ধবাবুকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর মতো বর্তমান নেতারা। ছিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বাকি নেতা, মন্ত্রীরা। ততক্ষণে বুদ্ধবাবুর অপেক্ষায় ভিড় বাড়তে শুরু করছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে।
তাঁর আসার অনেক আগে থাকতেই সরু গলিতে বাড়তে থাকে থিকথিকে ভিড়। দেহ আসতে আবেগে ভাসলেন তাঁর অগণিত ভক্ত, সমর্থকরা। পার্টি লাইন নিয়ে অনেক সময় তাঁর সঙ্গে বুদ্ধবাবু দ্বিমত হয়েছে, কিন্তু বন্ধুত্বে কোনওদিন টোল পড়েনি। কলকাতা এসে একথাই জানিয়েছেন, সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট।
বাম নেতাদের পাশাপাশি আলিমুদ্দিনে এসে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের তথ্য ও প্রযুক্তিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। চেয়েছিলেন শিল্পে সমৃদ্ধ হোক বাংলা। তুলেছিলেন পার্টির অন্দরেই শুদ্ধিকরণের স্লোগান। সালেম থেকে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম, আজ সব অতীত। শেষবারের মতো আলিমুদ্দিন থেকে বেরিয়ে গেলেন তিনি।
বিদায় বুদ্ধদেব !