২০১৯ সালে লোকসভায় প্রার্থী থাকার সময় ভোটের আগে রাতে তিনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ দেখে সময় কাটিয়েছিলেন। আর ২০২২ সালের বালিগঞ্জ উপ-নির্বাচনের দিন খোশ মেজাজেই দেখা গেল তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়কে। সকাল থেকে খানিকক্ষণ ঘুরপাক খেয়ে সিঙারা দিয়ে ব্রেকফাস্ট সারলেন বাবুল। ব্রেকফাস্ট করছেন বাবুল। আর লরেটো স্কুলে তখন সপ্তমে কেয়ার সুর। বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, তৃণমূলের সুবিধা করতে বুথের মধ্যে ঢুকেছে কলকাতা পুলিশ। দুই পুলিশ কর্মীকে বুথ থেকে বের করে দিতে গেল বিজেপি প্রার্থীকে। সকাল থেকে কখনও সাউথ পয়েন্ট, কখনও অশোকা হল বা লরেটো সব জায়গাতে একাই লড়াই করছেন এই প্রথম ভোটে দাঁড়ানো কেয়া ঘোষ। এরমধ্যেই বালিগঞ্জের বিভিন্ন বুথে ভুয়ো ভোটারদের দিয়ে ভোট দেওয়ানোর অভিযোগ উঠল শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। বিজেপি-র অভিযোগ ৫৯ নম্বর বুথ, লরেটো ডে স্কুল-সহ বিভিন্ন বুথে ছাপ্পা ভোট পড়ছে।
বেলা গড়াতেই উত্তাপ বাড়ে বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনকে ঘিরে। মঙ্গলবার সকালে সাউথ পয়েন্ট স্কুলে ভোট দেখতে গিয়ে বাধা পেলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। তাঁকে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। লেডি ব্রেবোর্ন বুথের কাছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন বালিগঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। তবে এই কেন্দ্রে এখনও ভোটের লাইনে ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। সকাল থেকেই বাবুল বিভিন্ন বুথে ঘুরে ঘুরে ভোট পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। তবে সাউথ পয়েন্টের কাছে তাঁকে আটকানোও হয়।
এদিকে সকাল সকাল পাঠভবনে ভোট দিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য জায়া মীরা ভট্টাচার্য ও মেয়ে সুচেতনা। অসুস্থতার কারণে এবারও ভোট দিলেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, বালিগঞ্জের ৩০০টি বুথের মধ্যে ২৩টি স্পর্শকাতর। ১০০ শতাংশ বুথেই CCTV নজরদারি থাকবে। ভোটের নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছে ১৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রতিটি বুথ ও বুথের বাইরে ২০০ মিটারের মধ্যে থাকবে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রতি বুথে থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর দুই জওয়ান। ২০০ মিটারের বাইরে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ (West Bengal Police)।
অন্যদিকে, আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রেও, ২ হাজার ১০২টি বুথই স্পর্শকাতর। ৫১ শতাংশ অর্থাৎ, দেড় হাজার বুথে থাকবে ওয়েব কাস্টিং ব্যবস্থা। নির্বাচন কমিশন সূত্রে আরও জানা গেছে, মোট ১৭ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৭৫ জন ভোটার প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। ভোটের কাজে রয়েছেন ১০ হাজার ৩২৭ জন কর্মী। ৫ জন পর্যবেক্ষকের পাশাপাশি, রয়েছেন ৪৪২ জন মাইক্রো অবজার্ভার।
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে কোনওদিনই জয় পায়নি তৃণমূল কংগ্রেস। বামেদের থেকে বিজেপি নিয়েছে এই আসন। দোলা সেন, মুনমুন সেনের মতো দুই প্রার্থীই দুবার বিজেপিতে থাকাকালীন বাবুল সুপ্রিয়োর কাছে হেরে গিয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব যাবার পর অনেক জলঘোলা শেষে বিজেপি সংসদ পদ ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন বাবুল। ঘটনাচক্রে দুবারের সেই আসানসোল জয়ী বাবুল এবার বিজেপির বিরুদ্ধেই লড়বেন বালিগঞ্জ উপানির্বাচন থেকে। এবং তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসনে তৃণমূলের হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বেন তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা।