কালীঘাটের পর এবার বিধানসভা। সেই বার্তাই ফের স্পষ্ট করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি রাজ্যে ছয় কেন্দ্রে উপ-নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর কালীঘাটে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা। ওই বৈঠক ঘিরে রাজ্য-রাজনীতিতে তৈরি হয়েছিল নানা জল্পনা।
২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। কালীঘাটের পর বিধানসভাতেও তিনি বুঝিয়ে দিলেন যতদিন তিনি আছেন, ততদিন তৃণমূলে তিনিই শেষ কথা বলবেন। গত সপ্তাহে কালীঘাটের বৈঠকে প্রবীণদের হাতে তৃণমূলের রাশ রেখে মমতা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তৃণমূলে এখনও নবীনদের কাজ এখনও অনেক বাকি রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গত লোকসভা ভোটের পর রাজ্যের ১০টি উপ-নির্বাচনে বিপুল ভাবে জয় পেয়েছে বাংলার শাসক দল। শেষ ছটি কেন্দ্রের মধ্যে উত্তরবঙ্গের সিতাই এবং দক্ষিণবঙ্গের হাড়োয়া কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীরা জয় পেয়েছে লক্ষাধিক ভোটের বেশি। যা তৃণমূল নেত্রীর আত্মবিশ্বাসকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলেই দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
এদিন, বিধানসভায় নব-নিযুক্ত বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই বৈঠকেই সাম্প্রতিক সময়ে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কোন লাইনে চলবে, তা স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী, আই-প্যাক সম্পর্কেও নাকি ওই বৈঠকে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। এর পাশাপাশি রাজ্য-রাজ্যপাল সম্পর্ককে এদিন শুধরে নিল বাংলার শাসক দল।
লোকসভা ভোটের পর হওয়া রাজ্যে উপ-নির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থীদের কার্যত একতরফা ভাবেই শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। এবার সেই পথে না হাঁটেনি সরকার। বরং নতুন ছয় বিধায়ককে এদিন বিধানসভায় এসে শপথ পড়ান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
রাজনৈতিক মহলের মতে, মমতার পাখির চোখ যে ২০২৬, তা এখন থেকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। তাই, কালীঘাটে দলকে যেমন বার্তা দিয়েছিলেন, বিধানসভায় এসে বিধায়কদের বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূলে শেষ কথা একমাত্র তিনি-ই।