গত সোমবারই কালীঘাটের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে দল নিয়ে বাইরে কেউ মুখ খুললে, তাঁকে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, এতদিন নাকি তৃণমূলের অন্দরে এটা স্রেফ কথার কথা হয়েই রয়ে ছিল। কিন্তু এবার কাউকে রেয়াত করা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের মতে, নাম না করলেও তৃণমূল নেত্রীর নিশানায় ছিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর।
সোমবারের এই নির্দেশের পরেও মঙ্গলবারও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বেলাগাম থাকার অভিযোগ ওঠে হুমায়ুনের বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত কসবার ঘটনার সময় এই হুমায়ুনই প্রথম তৃণমূলের অন্দরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফুলটাইম পুলিশমন্ত্রী চেয়ে দাবি জানিয়েছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পুরোসময়ের জন্য পুলিশমন্ত্রী হলে, তা তৃণমূল এবং রাজ্যের পক্ষেও ভাল।
এই ব্যাপারে হুমায়ুনের যুক্তি ছিল, নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। অনেক সময় সাক্ষাৎ চেয়েও তাঁর দেখা পাওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে হুমায়ুনকে পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম। তৃণমূল মন্ত্রীর দাবি ছিল, তৃণমূলের মধ্যে থেকে যাঁরা বড় বড় কথা বলছেন, তাঁদের ক্ষমতা থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি না লাগিয়ে ভোটে জিতে এসে দেখান।
এত কিছুর পরেও হুমায়ুনকে রোখা যায়নি। কলকাতা বিধানসভার অধিবেশনের ফাঁকেই হুমায়ুন জানান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তো দু নম্বর করেছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবারের নির্দেশ প্রথম কার্যকর হল বুধবার। প্রকাশ্যে দল বিরোধী কথা বলার অভিযোগে প্রথমবার শো-কজ করা হল ভরতপুরের বিধায়ককে। ঠিক সময় দলকে তিনি সব জানাবেন বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, হুমায়ুনকে প্রথমবার শো-কজ করে তৃণমূল বুঝিয়ে দিতে চাইল, তৃণমূল নেত্রী নির্দেশ এবার অক্ষরে অক্ষরে দলের অন্দরে পালন করা হবে। যদিও শো-কজের চিঠি হাতে পেয়েও সরবই আছেন হুমায়ুন। তিনি জানিয়েছেন, রাজনীতির ময়দানে তিনি কাউকে ভয় পান না।