Mango : আম ভালবেসে আম, গ্রীষ্মের তিন মাস নো কম্প্রোমাইজ, চিরঅক্ষয় হোক আম জনতার আম-প্রীতি

Updated : May 25, 2024 06:41
|
Editorji News Desk

খুব কষ্ট হলেও, বেশ কিছু কারণে গ্রীষ্মকালকে মাথায় করে রাখে বাঙালি। অবশ্যই তার একটি কারণ আম। বৈশাখের দুপুরে সারাদিন গলদঘর্ম হয়ে, সন্ধে হলেই কালবৈশাখী। তারপর দে ছুট ! আমাদের শৈশবের সঙ্গে যেন লেপটে রয়েছে আম কুড়োনোর স্মৃতি। গ্রাম, মফঃস্বলে এই সময় বাড়িতে বাড়িতে গাছ উপচে পড়ে রকমারি আমে। ঝড় বৃষ্টির পর টর্চ জ্বালিয়ে আম খোঁজার মজা, কিংবা দুপুর রোদে কাঁচা আম পেরে নুন লঙ্কা চিনি দিয়ে মেখে খাওয়ার আনন্দ- প্রায় প্রতি বাঙালিরই শৈশবের নস্টালজিয়া। 


কাঁচা থেকে পাকা, মিষ্টি থেকে টক, ছোট থেকে বড়, লাল থেকে হলুদ- আম জনতার আম খাওয়ায় কিন্তু বাছ বিচার নেই। যখন যা পাওয়া যায়, তাই-ই চেটেপুটে খেতে ভালবাসে বাঙালি। গরমকালে আম প্রেমী বাঙালির জলখাবার থেকে লাঞ্চ , স্যালাড থেকে ডিনার সবেতেই আম মাস্ট। মাত্র তিন মাস মেলে এই মিঠা ফল। তাই আমের সঙ্গে নো কম্প্রোমাইজ। 

আম কাহিনি : 

তিন হাজার বছর আগের ‘বৃহদারণ্যক উপনিষদ’-এ প্রথম পাওয়া গিয়েছিল আমের উল্লেখ। তারপর থেকে বাঙালির পুজোর ঘটে আমের পল্লব থেকে, শাড়িতে আম কল্কার নকশা- সব মিলিয়ে আমের মাথায় উঠেছে ফলের মুকুটও।  

আম-জাত : 

রঙ্গে ভরা বঙ্গে, আমের কিন্তু নানা রকফেরও রয়েছে। কেউ ভালবাসে গোলাপখাস, তো কেউ বা হিমসাগর, কেউ বা আম্রপালি তো কেউ ল্যাংড়া-ফজলি। 


আম চেনা এবং কেনা: 

বাজারে গিয়ে ঝুড়ি ভর্তি পাকা আম দেখলেই যেন মনটা ভাল হয়ে যায় । আর তারপর বাজারের থলিতে কিলোখানেক বা কিলো দুয়েক আম তো পড়বেই । কিন্তু, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাকা আম দেখলেই তা সঙ্গে সঙ্গে কিনে নেওয়া ঠিক হবে না । অনেকসময়, কৃত্রিম পদ্ধতিতে রাসায়নিক ব্যবহার করে আম পাকানো হয় । 


চেনার উপায় জানুন- 

কৃত্রিমভাবে পাকানো আম কম রসালো হয় । সেই তুলনায় গাছ পাকা আম বেশি রসালো হয় ।যদি, আমের গায়ে হলুদ এবং সবুজ রঙের মিশ্রণের প্যাচ থাকে, তাহলে বুঝবেন সেটা রাসায়নিক উপায়ে পাকানো হয়েছে । কারণ গাছ পাকা আমের রঙে সবুজ ও হলুদের সংমিশ্রণ থাকে ।

বাজার থেকে আম কিনে আনার পর অনেকেই তা জলে ডুবিয়ে রাখেন । এই পদ্ধতিতে বোঝা যেতে পারে আম পাকাতে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে কি না । যদি দেখেন আম জলে ডুবে যাচ্ছে, তা হলে বুঝবেন স্বাভাবিক নিয়মেই তা পেকেছে । যদি আম জলে না ডোবে, সে ক্ষেত্রে বুঝতে হবে, তা রাসায়নিক দিয়ে পাকানো।
আম যদি চাপ দিয়ে নরম লাগে, তা হলে তা গাছ পাকা আম বলে ধরে নেওয়া যায় । কিন্তু যদি তা না হয়, তাহলে রাসায়নিক ব্যবহার করেই পাকানো হয়েছে ।
কৃত্রিমভাবে পাকানো আম খেলে নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে । যেমন, মুখ, গলা জ্বালা করতে পারে, পেটে ব্যথা হতে পারে, ডায়ারিয়ার সমস্যা হতে পারে ।

Gayatri Devi: কৈশোর থেকেই 'বোল্ড'! মহারানি গায়ত্রী দেবী স্টাইল-সৌন্দর্য-রহস্য-আভিজাত্যের এক আশ্চর্য মিশেল
 

আম ও খান, মেদ ও ঝরান: 

অনেকেই বলেন মেদ ঝরানোর পথে বড় বাধা আম। সত্যিই কি তাই? নাকি আম খেয়েও ওজন ঝরানো যায়?  আমে প্রচুর পরিমাণে ফ্রুকটোজ থাকে, তাই ন্যাচারাল সুগারের কাজ করে। আবার সারা বছরে মাস তিনেকই আম পাওয়া যায়, বাকি ৯ মাস আপনি চাইলেও পাবেন না। তাই মেদ ঝরানোর সময়েও আম খান, শরীরে অন্য কোনও সমস্যা না থাকলে। কিন্তু মেপে খান, এক কাপের বেশি আম খাবেন না, এতে ক্যালোরিও নিয়ন্ত্রিত থাকবে, আমের অন্যান্য গুণও আপনার শরীরে সবচেয়ে ভালভাবে পৌঁছবে। কখন খাচ্ছেন, সেটাও খুব জরুরি। দিনের বেলা আম খান, ব্রেকফাস্ট অথবা লাঞ্চে, কিন্তু ডিনারে খাবেন না, শোয়ার আগেও না। তাহলেই কিন্তু হজমের সমস্যা হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন  পরিমিত আম খাওয়া স্বাস্থ্য পক্ষে ভাল ।

শাস্ত্র বলছে খাওয়ার আগে আম স্নান: 

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে আমাদের শরীরে তাপ তৈরি করে যে ফাইটিক অ্যাসিড, তা আমকে জলে ভিজিয়ে রাখলে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া, এই জলে ভিজিয়ে রাখার কারণে আমের মধ্যে থাকা লোহা, জিঙ্ক, ক্যালসিয়ামের মতো পদার্থগুলির অধিক পরিমাণে দেহের মধ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রটি আর তৈরি হয় না। এছাড়া, জলে ভিজিয়ে আম রেখে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, ব্রণ এবং অন্যান্য একাধিক শারীরিক সমস্যা হতে পারে।

রূপটানে আম: 

রূপচর্চার জন্যও কিন্তু আমের জুড়ি মেলা ভার। কারণ আমের ভিটামিন সি ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন করে। আর আমে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের গুণে ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ পড়ে না। গোলাপ জলের সঙ্গে আম ব্লেন্ড করে মুখে লাগলেও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। 

সব মিলিয়ে রঙে রসে গন্ধে, আম বাঙালির কাছে, আমের বিকল্প আর কিছুই হতে পারে না। মাত্র তিন চারটে মাস, এই ফল পাওয়া যায়। তাই যে যেখানে যতটুকু সুযোগ পাচ্ছেন, আমের স্বাদ নিন। কাঁচা থেকে পাকা, মিষ্টি থেকে টক বাঙালির আম প্রীতি চিরঅক্ষয় হোক। 

Mango

Recommended For You

editorji | লাইফস্টাইল

High Demand For Grapes: বিরিয়ানির চেয়ে হিট আঙুর! Healthy নিউ ইয়ার উদযাপন বেশি পছন্দ জেন-জির

editorji | লাইফস্টাইল

Christmas-Armenian Church: ২৫ ডিসেম্বর নয়, কলকাতার এই গির্জায় বড়দিন আসে জানুয়ারিতে

editorji | লাইফস্টাইল

Kolkata Christmas-Last Supper: ইটালিতে না, কলকাতাতেই আছে দ্য ভিঞ্চির 'দ্য লাস্ট সাপার' ?

editorji | লাইফস্টাইল

Christmas Bow Barrack: বো ব্যারাকের বড়দিন! সাত দিনের আলো আর বছরভরের উপেক্ষা নিয়ে বেঁচে অ্যাঙ্গলো পাড়া

editorji | লাইফস্টাইল

Lady Canning: কেক নয়, ভাইসরয় দম্পতির জন্মদিনে খাওয়া হত মিষ্টি! কলকাতায় মন বসত না, প্রিয় ছিল এই শহর