দ্য লাস্ট সাপার। যীশুর শেষ রাত কেমন ছিল, সেই নিয়ে দু-হাজার বছর ধরেই রহস্য ঘন হয়েছে বিশ্বজুড়ে। দ্য ভিঞ্চির আঁকা বিশ্ববিখ্যাত ছবিটিও সেই উত্তর-ই খোঁজে। সে ছবি নাকি কলকাতাতেই রয়েছে। জানেন?
সে কী! তাহলে ইটালির রাজধানী মিলানের চার্চের 'দ্য লাস্ট সাপার' মিথ্যে? নাহ! তবে কলকাতার বুকেও রয়েছে দ্য লাস্ট সাপার। তবে তা দ্য ভিঞ্চির নয়। তাহলে? বলছি সেই গল্প।
লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, দ্য লাস্ট সাপার ছবিটি এঁকেছিলেন ১৪৯৫ থেকে ১৪৯৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে। যা দেখার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকরা মিলান শহরে সান্টা মারিয়া ডেলা গ্রেজ চার্চের বাইরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন, সেই বহু আলোচিত ছবি কিনা খাস কলকাতায়? আর আপনি এতদিন জানতেন না। দ্য লাস্ট সাপার ছবিটি রয়েছে অফিস পাড়ার এক চার্চে। কোন চার্চ? কাউন্সিল হাউজ স্ট্রিটের সেন্ট জন'স চার্চ।
আড়াইশ বছরের পুরনো চার্চের দরজা ঠেলে ঢুকলে মূল বেদীর বাঁ দিকে রয়েছে ছবিটি। নাহ! দ্য ভিঞ্চির আঁকা নয়। বিখ্যাত শিল্পী জোহান জোফানির আঁকা ‘লাস্ট সাপার’। সালটা, ১৭৮৭। সেন্ট জন'স চার্চের উদ্বোধন উপলক্ষে ছবিটি এঁকেছিলেন। জোফানির ছবিটি দ্য ভিঞ্চির মূল ছবির সরাসরি কপি নয়। সেন্ট জন'সের ছবিজুড়ে ভারতীয় ছাপ। ভারতীয় ধাঁচের তলোয়ার, ছাগলের চামড়ার তৈরি জলের ব্যাগ, জলের জগ, সবেই রয়েছে দেশীয় ছোঁয়া।
জোফানি যীশুর মুখ এঁকেছিলেন চার্চের তৎকালীন ফাদার পার্থেনিওর আদলে, যীশুর যে শিষ্য বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন, সেই জুডাসের মুখ আঁকা হয়েছিল তৎকালীন কলকাতার এক নিলামকারী উইলিয়াম টুলোহর অনুকরণে। সেন্ট জনের মুখ আঁকা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট লর্ড ব্ল্যাকিয়ারের আদলে। যীশুর সঙ্গে থাকা বারোজন শিষ্যের প্রত্যেকের মুখই কারোর না কারোর আদলে আঁকা।
এই ছবি নিয়ে বিতর্কের শেষ ছিল না। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা কলকাতা তথা ভারতের ক্ষমতার ছবিটা শিল্পী সরাসরি ফুটিয়ে তুলেছিলেন তাঁর ছবিতে। ছবিটি ২০১০ সালে নতুন করে সংরক্ষণ করা হয়।