পয়লা বৈশাখ (bengali new year)! নববর্ষ! বাঙালির উদযাপনের দিন। বাংলা সংস্কৃতির উদযাপনের দিন (bengali new year 2022)! ১৪২৮ বঙ্গাব্দ শেষ হয়ে শুরু হল ১৪২৯। 'পয়লা বৈশাখ' (Pohela Boishakh) বলতেই আমবাঙালির মনে পরপর যে ছবি ভেসে আসে, তার মধ্যে একটি অনিবার্য অংশ হল 'হালখাতা'। মনেপ্রাণে বাঙালি, অথচ 'হালখাতা' (Haal khata) সম্বন্ধে জানে না, এমনটা খুঁজে পাওয়া ভার! কিন্তু, জানেন কি এই 'হালখাতা'র (Haal khata 2022) সঙ্গেই জড়িয়ে আছে এক অতি প্রাচীন ইতিহাস?
আরও পড়ুন: বিহু-বৈশাখী-হালখাতা, নববর্ষে দেশের নানা প্রদেশে নানা উদযাপন
'হাল' শব্দটি সংস্কৃত এবং ফারসি- এই দুই ভাষা থেকেই এসেছে বলে দাবি করা হয়। সংস্কৃত শব্দ 'হাল'-এর অর্থ হল 'লাঙল'। আবার, ফারসি 'হাল'-এর অর্থ হল 'নতুন'। 'হালখাতা'র (Haal khata 2022) ক্ষেত্রে এই দুটি অর্থই গ্রহণযোগ্য। ইতিহাস বলে, মানুষের স্থায়ী বসবাস শুরু হয় লাঙলের ব্যবহার শেখার পর। কৃষিজাত দ্রব্য বিনিময়ের প্রথার শুরুও হয় তখন থেকেই। এই লাঙলের মাধ্যমে চাষের ফলে উৎপন্ন দ্রব্যের বিনিময়ের হিসেব যে খাতায় লিখে রাখা হত, তার নামই ছিল 'হালখাতা' (Haal khata 2022)।
যদিও, 'হালখাতা'র (Haal khata festival) ব্যবহারের ইতিহাস ঘাঁটতে গেলে পাওয়া যায় সম্রাট আকবরের নামও। বস্তুত, বাংলা সনের অন্যতম প্রবর্তক হিসেবেও মোগল সম্রাট আকবরকেই ধরা হয়ে থাকে।
প্রাচীনকালের হালখাতার (Haal khata festival) অনুকরণে জমিদারদের কাছ থেকে বকেয়া রাজস্ব আদায়ের জন্য 'পুণ্যাহ' (Haal khata 2022) চালু করেছিলেন সম্রাট আকবর। এই একই নিয়ম মেনে বাংলার নবাব মুর্শীদকুলি খাঁ-ও 'পুণ্যাহ' প্রচলন করেন। এই সময় খাজনা বা রাজস্ব পরিশোধ করতেন সকলে। প্রাচীন কালের হালখাতা (Haal khata 2022) নবাবি আমলে নাম পাল্টে 'পুণ্যাহ' হলেও কিন্তু পরবর্তী কালে সেই 'হালখাতা' নামটিই প্রচলিত হয়ে পড়ে।
সম্রাট আকবরের সময়কাল থেকেই পয়লা বৈশাখের (bengali new year 2022) উদযাপন শুরু হয়। এর সঙ্গে শুরু হয় বাংলা বছরের প্রথম দিনে দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হাল-নগদ করার প্রক্রিয়া। মোগল আমল থেকেই পয়লা বৈশাখে (Pohela Boishakh) অনুষ্ঠান করা হত। প্রজারা চৈত্র মাসের শেষ পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করতেন এবং পয়লা বৈশাখে (Pohela Boishakh) জমিদাররা প্রজাদের মিষ্টিমুখ করানোর পাশাপাশি আনন্দোৎসব করতেন।