নিঃশর্ত! বয়স যত বাড়তে থাকে, যে কোনও সম্পর্কের নামের আগে থেকেই বোধহয় ঝরে যায় এই শব্দটা- নিঃশর্ত। সম্পর্ক হয়ে ওঠে জটিল। তবে মানুষের সঙ্গে পোষ্যর সম্পর্ক বোধহয়, সবকিছুর ঊর্ধ্বে। বিশেষ করে পোষ্য যদি সারমেয় হয়। কোনও অবস্থাতেই হাত ছাড়েনা ওরা। শেষ পর্যন্ত পাশে থেকে যায়। কুকুরদের এই চারিত্রিক দিকটি এবার কাজে লাগানো হচ্ছে আদালতেও।
কীভাবে? এই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সারমেয়দের বলা হচ্ছে কোর্টহাউজ ফেসিলিটি ডগ। নানা অপরাধের শিকার যারা, তাঁদের আতঙ্ক কাটাতেই ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির কুকুরদের।
শিশুরা যখন কোনও অপরাধের শিকার হয়, অধিকাংশ সময় ঘটনার পর একধরনের ট্রমা কাজ করে শিশুদের। সংশ্লিষ্ট অপরাধের মামলা চলাকালীন আদালতেও সেই সব শিশুদের দিয়ে সাক্ষ্য দেওয়া কঠিন হয়ে ওঠে। যৌন হেনস্থার ক্ষেত্রেও এরকমটা আকছার ঘটে। সেই সময়ে ভিক্টিমদের শান্ত করার জন্য, আতঙ্কের ভাব কাটানোর জন্য, জীবনের প্রতি ভরসা ফেরানোর জন্য আনা হয় কোর্টরুম ফেসিলিটি ডগদের। ভিক্টিমদের জীবনের প্রতি আস্থা ফেরাতে, তাঁদের একটু আলোর দিকে এগিয়ে দেয় বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সারমেয়রা।
কুকুরদের নিয়ে আরও একটি সমীক্ষা হয়েছে সম্প্রতি। বয়স বাড়লেই শরীরে থাবা বসায় বার্ধ্যক, সঙ্গে মনে থাবা বসায় একাকিত্ব। এই দুইয়ের সঙ্গে যুঝতেই কুকুর পুষুন। এমনই বলছে গবেষণা।
BMC পাবলিক হেলথ -এ প্রকাশিত গবেষণাটি করা হয়েছিল ৩৮ জন কুকুরের মণিবকে নিয়ে। গবেষণার ফলাফল বলছে, মণিবের সঙ্গে পোষ্যর সুস্থ সম্পর্ক হলে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে মণিবের শারীরিক এবং মানসিক অবস্থায়।
ছোট বড়, সব রকম কুকুরের দেখভালের মধ্যে তাকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার অংশটুকু পড়েই, ফলে এতে মনিবের হালকা থেকে ভারী এক্সারসাইজ নিয়মিত হয়েই যায়। এছাড়া, পোষ্যর যত্ন আত্তি করা, খাবার বানানো, পোষ্যর সঙ্গে খেলা করা এসব নিয়মিত করলে, মানসিক স্বাস্থ্য ভাল থাকে। এবং সারাদিনের নানা কাজের মধ্যে দায়িত্ব, শৃঙ্খলা থাকে বলে লাইফস্টাইল সুস্থ থাকে। লাইফস্টাইল সুস্থ থাকলে তার প্রভাব শরীরে পড়তে বাধ্য।