ইন্টারনেটে আসক্তি। এই নিয়ে বহু বছর ধরেই নানা আলোচনা চলছে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রেই। নতুন প্রজন্মের স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট প্রীতি তো সর্বজনবিদিত। কিন্তু, এই আসক্তির ফলে যে পরিণতির মুখোমুখি হতে হয় তা ভয়াবহ। আরও পাঁচরকমের আসক্তির মতোই ইন্টারনেট আসক্তিও মনের উপর এতটাই প্রভাব ফেলে যে তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষের সামাজিক জীবন। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে কেরিয়ার এবং স্বাস্থ্যেও। এ কথা এখন সমাজ-সচেতন মানুষমাত্রেই জানেন।
গবেষণা থেকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। বয়ঃসন্ধির মস্তিষ্ককে অত্যন্ত বেশিমাত্রায় প্রভাবিত করে ফেলে এই আসক্তি একটি নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক কারণে জন্য।
ইন্টারনেটে আসক্ত মস্তিষ্ক কীভাবে তার কার্যকলাপ চালায়, তা বোঝার জন্য এবং কীভাবে মস্তিষ্কের অঞ্চলগুলি একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তা জানার জন্য, একটি কার্যকরী চৌম্বকীয় অনুরণন ইমেজিং (fMRI) ব্যবহার করা হয়।
সেখানেই দেখা যায়, কিশোর-কিশোরীদের মস্তিষ্কের একাধিক নিউরাল নেটওয়ার্ক জুড়ে প্রভাব বিছিয়েছে ইন্টারনেট আসক্তি। মস্তিষ্কের যে অংশগুলি বিশ্রাম নেওয়ার সময় সক্রিয় হয় (ডিফল্ট মোড নেটওয়ার্ক) সেখানেও মস্তিষ্কের বর্ধিত এবং হ্রাসপ্রাপ্ত কার্যকলাপের একটি মিশ্রণ স্থানান্তরিত করা হয়।
সেখানেই দেখা যায় যে, ইতিমধ্যেই, সক্রিয় চিন্তাভাবনার সঙ্গে জড়িত মস্তিষ্কের অংশগুলিতে কার্যকরী সংযোগে সামগ্রিকভাবে হ্রাস পেয়েছে (এক্সিকিউটিভ কন্ট্রোল নেটওয়ার্ক)।
ঠিক এর ফলেই এই আসক্তি। নিউরোনের ভিতরঘরের নানা পরিবর্তনই কিশোর-কিশোরীদের আসক্তিমূলক আচরণ এবং সেই সঙ্গে বৌদ্ধিক ক্ষমতা, শারীরিক সমন্বয়, মানসিক স্বাস্থ্য এবং বিকাশের সঙ্গে সম্পর্কিত আচরণগুলিকে একেবারে অন্য এক বদলের দিকে চালিত করে।