একটা সময় ছিল, যখন বাংলার ভেতরে বাঙালির হট ফেভারিট টোরিস্ট ডেস্টিনেশন ছিল দীপুদা। দীঘা-পুরি-দার্জিলিং। এখন কিন্তু সে দিন গেছে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সে, পাহাড়ে নিত্যনতুন অফবিট লোকেশনে হোম স্টে হয়ে যাওয়ার ফলে উত্তরবঙ্গে এখন ঘোরার জায়গার অভাব নেই। বছরে দুবার করে দার্জিলিং-কালিম্পং গিয়েও সব জায়গা ঘুরে ওঠা হবে না। হাতে দিন তিনেকের ছুটি থাকলে তাই এখন বাড়ির কাছের পাহাড়ি গ্রামগুলো হয়ে উঠতে পারে, আপনার প্রিয় গন্তব্য। আজ সেরকমই এক গ্রামের হদিশ রইল এডিটরজি বাংলার দর্শক পাঠকদের জন্য। জেলা দার্জিলিং, গ্রামের নাম দাওয়াইপানি।
ঘুম স্টেশন থেকে মাত্র কুড়ি মিনিট দূরত্বে যে একটুকরো স্বর্গ আছে, জানতেন? দাওয়াইপানি নামের অর্থ ঔষধি জল। দাওয়াইপানি গ্রামের নামকরণ হয়েছে গ্রামটির সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর থেকে। নদীটির জল নাকি নানা রকম খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ। গ্রামের মানুষ ওই জল পান করেই নাকি রোগমুক্ত থাকেন।
তবে রোগমুক্তি হোক না হোক, দাওয়াইপানি এলে চোখের আরাম হবেই হবে। গোটা গ্রাম থেকেই দেখতে পাওয়া যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। কাছেই গ্লেনবার্ন আর মকাইবাড়ি চা বাগান। ভ্যালি থেকে দেখতে পাওয়া উল্টোদিকের পাহাড়টাই আসলে দার্জিলিং শহর, পাশেরটা লেবং, আরেকটু দূরে সিকিম। দাওয়াইপানি জুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রচুর হোম স্টে। আপার দাওয়াইপানিতে হোম স্টে বেশি। তাকদা লাগোয়া লোয়ার দাওয়াইপানি তুলনায় আরও নির্জন। তবে এই গ্রামের বিশেষত্ব হল, প্রায় সব হোমস্টের জানলা থেকেই বাইরে তাকালে দেখা যায় রূপসী কাঞ্চনজঙ্ঘা।
দিন দুয়েক দাওয়াইপানি থাকলে কী করবেন? ঘুরে আসতে পারেন, কাছের তাকদা-তিনচুলে-লামাহাট্টা থেকে। আবার দার্জিলিং-এর চার্ম পেতে চাইলে মাত্র ১ ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন কুইন অফ হিলস-এ। আর এসব যদি কিছুই করতে ইচ্ছে না করে? হোমস্টেতে বসেই কাটিয়ে দিতে পারেন অলস একটা দুপুর। জানলার বাইরে পাইনের বন, কুয়াশার আসা যাওয়া দেখতে পারেন। দুপুর গড়ালে বেরিয়ে পড়তে পারেন হাঁটতে। সন্ধে যখন বিকেলের আল ধরে হাঁটা দেবে, সূর্য ডুব দেবে দুই পাহাড়ের ঢাল বেয়ে, দিন শেষে ঘরে ফিরবেন চা শ্রমিকেরা, তখনও তাঁদের ঠোঁটে লেগে আলগা হাসির রেশ। এসব দেখতে দেখতে ফুরুত করে শেষ হয়ে যাবে দিন।
আবার ট্রেন বা প্লেনে চেপে ঘরে ফেরার পালা। আবার শুরু পাহাড়-পাহাড় মন খারাপ।