২০২২ সালের ১১ অগাস্ট। গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলকে। নীচুপট্টির বাড়ি সেদিনই ছেড়েছিলেন। তারপর ৭৭৫ দিন পর ফের সেই বাড়িতেই প্রবেশ করলেন কেষ্ট।
প্রথমে আসানসোল জেলে বন্দি ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তারপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দিল্লি। সেখানে তিহার জেলে ঠাঁই হয়েছিল তাঁর। ৭৭৫ দিন পর ঘরে ফিরে আসাটা কেমন হল অনুব্রতর?
ছবিটা চেনা। কিন্তু মূল নায়কের অভিব্যক্তি ভিন্ন। যেদিন অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। হাজার হাজার দলীয় কর্মী সমর্থকের ভিড় জমেছিল অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির সামনে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের হাত ধরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
দু-বছরে অজয় দিয়ে জল বইয়েছে অনেকটাই। বদলেছে অনুব্রত চেহারাতে। মঙ্গলবার ভোরে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন অনুব্রত মণ্ডল। তারপর সেখান থেকে গাড়ি করে বর্ধমান হয়ে বোলপুরের পথে রওনা দেন তিনি। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ গুসকরা পৌঁছন। সেখানে সামান্য বিরতি নিয়ে বোলপুর পৌঁছন।
সকাল তখন ৯টা ১৫। নীচুপট্টির বাড়ির সামনে দাঁড়ায় অনুব্রত মণ্ডলের গাড়ি। হাজার হাজার কর্মী সমর্থক ভিড় বাড়ির সামনে। গাড়ি থামতেই চারিদিক থেকে ফুল ছুড়তে শুরু করেন কর্মীরা। ধীরে ধীরে গাড়ি থেকে নেমে আসেন অনুব্রত। সঙ্গে তাঁর মেয়ে। মেয়ের হাত ধরে ধীরে ধীরে নিজের বাড়িতে ঢোকেন কেষ্ট। বসেন নিজের কার্যালয়ের চেয়ারে। তারপর যে ছবিটা ধরা পড়ল সেটা দেখতে হয়তো কেউই অভ্যস্থ ছিলেন না। কেঁদে ফেললেন 'দোর্দোন্ডপ্রতাপ' অনুব্রত।
যদিও মঙ্গলবার বাড়ি পৌঁছে খুব একটা মুখ খোলেননি অনুব্রত। শারদীয়া শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। এবং জানিয়েছেন, শরীর সাথ দিলে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন তিনি।
গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছিল এক সময়ের বীরভূমের দোর্দন্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে। অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির পাশাপাশি একের পর এক অনুব্রত ঘনিষ্ঠের বাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। গ্রেফতার করা হয় তাঁর মেয়েকেও।
প্রায় দু-বছর পর জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। রাজনীতিতে দুবছর সময়টা অনেকটা বেশি। রাজনৈতিক মহলের জোর জল্পনা, জেল থেকে ফিরে এসে বীরভূমে কি তাঁর পুরনো রাজনৈতিক কর্তৃত্ব ফিরে পাবেন? নাকি কিছুটা হলেও এই মুহূর্তে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে রয়েছেন অনুব্রত। কারণ অনুব্রত জেলে যাওয়ার পর পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচন হয়েছিল। এবং দুটো নির্বাচনেই ভালো ফল করেছিল রাজ্যের শাসক দল।