শীতকাল মানেই কেক, শীতকাল মানেই নলেন গুড়, পায়েস, পিঠে-পুলি... যাকে বলে খাওয়া-দাওয়ার পার্বণ । তবে, এ পার্বণ মোয়া ছাড়া একেবারেই জমে না । আর সেটা যদি হয় জয়নগরের মোয়া, তাহলে তো আর কোনও কথাই নেই । জাঁকিয়ে শীত পড়তেই মোয়ার চাহিদা বেড়েছে । তাইতো, বহড়ু, জয়নগরের দোকান, কারখানায় ব্যস্ততা তুঙ্গে । দম ফেলার ফুরসত নেই ব্যবসায়ীদের ।
জয়নগরে গেলেই দেখা যাবে, কারখানায় বড় বড় ১০-১২ টা কড়াইয়ে মোয়া বানানোর প্রস্তুতি চলছে । বড় বড় কড়াইয়ে জ্বাল হচ্ছে খেঁজুরের গুড় । সেই গুড়েই মাখা হচ্ছে কনকচূড় ধানের খই, সঙ্গে গাওয়া ঘি । ভাল করে পাক দেওয়ার পর তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু মোয়া । তারপর চলছে প্যাকেটে ভরার কাজ । পুরুষের সঙ্গে সঙ্গে মোয়া তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছেন মেয়ে-বউরাও ।
মোয়া ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এতদিন ঠান্ডা ভাল মতো না পরায় মোয়া তেমন বিক্রি হচ্ছিল না। কিন্তু এই কয়েকদিনে তাপমাত্রা অনেকটাই নেমেছে। তাই বছর শুরু হতেই মোয়ার বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে । রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ও বিদেশেও যাচ্ছে জয়নগরের মোয়া । ফলে ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে ।
যদিও, মোয়ার দাম এবার অনেকটাই চড়া। জয়নগরের বহড়ু এলাকার বাসিন্দা দীর্ঘ দিনের মোয়া ব্যবসায়ী গনেশ দাস জানান, মোয়ার মান নির্ভর করে ভাল নলেন গুড় ও মোয়ার পাকের উপর। যত শীত বাড়বে ততই নলেন গুড়ের মান ভাল হবে। ভাল জাতের গুড় পাওয়া যাবে। আর সেই গুড়ে তৈরি মোয়ার স্বাদও অতুলনীয় হবে । এখন নলেন গুড় ভাল মিলছে। তাই মোয়ার মানও ভাল হচ্ছে। তবে বাজারে সব জিনিসের দাম বেড়ে গিয়েছে । তাই দাম একটু চড়া । ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে মোয়া পাওয়া যাচ্ছে। আর খুচরো মোয়ার দাম ৮ টাকা থেকে শুরু। ২৫ টাকা পিসের মোয়াও রয়েছে।
জয়নগরের মোয়া জগৎ বিখ্যাত । সম্প্রতি, এখানকার মোয়া GI স্বীকৃতি পেয়েছে । সম্প্রতি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জয়নগরের মোয়ার প্রশংসা করেছেন । একইসঙ্গে জয়নগরে মোয়ার হাব তৈরিরও ঘোষণা করেছেন তিনি ।