নদিয়ার হাঁসখালি গণধর্ষণ কাণ্ডে (Hanskhali Rape Case Update) মূল অভিযুক্ত ব্রজগোপালের বাবা ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা সমরেন্দু গয়ালিকে (Samarendu Gayali) গ্রেফতার করল সিবিআই (CBI)। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ তাকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ঘটনার পর থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এদিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রথমে তাঁকে কৃষ্ণনগরে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে ডাকা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পরই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। সিবিআই আধিকারিকরা মনে করছেন, প্রধান অভিযুক্ত ব্রজগোপালের বাবা সমরেন্দুকে জেরা করে হাঁসখালি কাণ্ডের অনেক তথ্য সামনে আসবে।
আরও পড়ুন: মালদা বিস্ফোরণে NIA তদন্তের আবেদন, জনস্বার্থ মামলা দায়েরের অনুমতি হাই কোর্টের
এদিন নদিয়ার হাঁসখালিতে নাবালিকা গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত ব্রজগোপাল গয়ালির বাবা ও মাকে তলব করেন সিবিআই আধিকারিকরা। ছেলের গ্রেফতারির পর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না সমরেন্দুর। জানা যায়, নদীয়ার বগুলায় গা ঢাকা দেন তৃণমূল নেতা সমরেন্দু। খবর পেয়ে সিবিআই আধিকারিকরা মঙ্গলবার তাঁকে তলব করেন। মঙ্গলবার হাঁসখালির অস্থায়ী ক্যাম্পে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। সেখানেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
হাঁসখালি গণধর্ষণের তদন্তে অনেকগুলি প্রশ্ন উঠে এসেছে সিবিআইয়ের কাছে। তাই ব্রজগোপালের বাবা ও মাকে তলব করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানতে চাইছে, জন্মদিনের পার্টি তৃণমূল নেতা সমরেন্দুর বাড়িতে হয়েছিল কিনা। পরিবারের পক্ষ থেকে নির্যাতিতাকে কি আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল! নাকি ব্রজগোপাল নিজে আমন্ত্রণ জানান ওই নাবালিকাকে! ঘটনার সময় কোথায় ছিলেন সমরেন্দু ও তাঁর স্ত্রী! গোয়েন্দারা বুঝতে পারছেন না, ভোররাতে অসুস্থ হওয়ার পর কেন বাড়ি ফিরেছিল ওই নির্যাতিতা। শ্মশানে মৃতদেহ দাহ করার সময় কারা উপস্থিত ছিলেন! হাঁসখালি থানার আধিকারিকদের কেউ কি সেখানে উপস্থিত ছিল! সিবিআই আধিকারিকরা মনে করছেন, এই সব প্রশ্নের মধ্যেই হাঁসখালি কাণ্ডের তদন্তের অনেকটাই লুকিয়ে আছে।
রবিবার হাঁসখালি কাণ্ডের তদন্তে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সূত্রের খবর, নির্যাতিতাকে দাহ করার সময় ওই তিন ব্যক্তি শ্মশানে উপস্থিত ছিল। নির্যাতিতার পরিবারকে তারা খুনের হুমকি দেন বলে অভিযোগ। সিবিআই সূত্রে খবর, এই তিনজনের বয়স ২০-২২ বছরের মধ্যে। জোর করে মৃতদেহ দাহ করা, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ এই তিনজনের বিরুদ্ধে।
হাঁসখালির গণধর্ষণ কাণ্ডের পরই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সমরেন্দুর ছেলে ব্রজগোপালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় প্রভাকর পোদ্দার নামে আরও এক ব্যক্তিকে। সিবিআই তদন্তে নেমে রঞ্জিত মল্লিক নামে এক ব্যক্তিকে জেরা করে। সিবিআইয়ের তদন্ত পদ্ধতিতে একের পর এক নতুন তথ্য সামনে এসেছে। হাঁসখালি গণধর্ষণের ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। রাজ্য পুলিশের হাত থেকে তদন্তের ভার যায় সিবিআই আধিকারিকদের হাতে।