সন্ধে নামার আগে। বীরভূমের রাস্তায় মিস্টি হাতে নেমে পড়লেন তৃণমূল নেতা কাজল শেখ। পথচলতি সবার হাতে বিলি করা হল কালাকাঁদ। আর বোলপুরের পার্টি অফিসে তখন উল্লাস তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের। ঠিক দু বছর এক মাস। গরুপাচার মামলায় জামিনে মুক্ত অনুব্রত মণ্ডল। দিল্লি থেকে এই খবর আসতেই পুজোর আগে এক অন্য শুক্রবার বাংলার এই জেলা সদরের জন্য।
খাঁচা বন্দি তোতাপাখি। সম্প্রতি আবগারি দুর্নীতি মামলায় দিল্লির তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে জামিন দিয়ে সিবিআইকে এভাবে ভর্ৎসনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। দীর্ঘ ১১ বছর পর সেই ভর্ৎসনা আদালতের থেকে ফের শুনতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে। শুক্রবার দিল্লির আদালতে এবার ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল কেন্দ্রের আর এক সংস্থা ইডিকে। আদালত সূত্রে দাবি করা হয়েছে, গরুপাচার মামলার চার্জশিটে অনুব্রত আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন, তা প্রমাণ করতে পারেনি ইডি। অনুব্রত আইনজীবীর দাবি, যা তাঁর মক্কেলের জামিনের রাস্তাকে প্রশস্ত করেছে।
এর পাশাপাশি এই মামলায় আরও একটি বিষয় ছিল লক্ষণীয়। আর তা হল ভাষা। গরুপাচার মামলায় যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাঁরা বাংলা ছাড়া আর কিছু জানেন না। তাই তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছিল বাংলাতে। যা আদালতে সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল ইডির কাছে। কারণ, বাংলা থেকে অনুবাদের কাজ এখনও চলছে। তাই চার্জশিট সম্পূর্ণ নয়। ফলে বয়ানের কপি হাতে না থাকার কারণে মূল মামলার ট্রায়াল কোনওভাবেই শুরু করা যাচ্ছে না। আর এই মামলায় বয়ান লিখতেই পারেননি অনুব্রত মণ্ডল। গ্রেফতারের পর জানিয়েছিলেন, তিনি লিখতে পড়তে জানেন না।
গত লোকসভার প্রচারে বীরভূমে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, ভোট মিটলেই জেল থেকে বেরিয়ে আসবেন কেষ্ট। সেই বেরলেন অনুব্রত মণ্ডল। তবে পুজোর আগে। নেতার মুক্তির খবরে এখন উল্লাস বীরভূমে। জেলার নেতা কাজল শেখ জানিয়েছেন, এই মুক্তি প্রত্যাশিত ছিল। অপেক্ষা এখন বীরভূমের বাঘের নিজের ডেরায় ফেরার।