তখন নব্বইয়ের দশক । টিভি চ্যানেল ছিল হাতে গোনা । সেইসময় দূরদর্শনের রমরমা । মহালয়ার (Mahalaya) ভোরে মহিষাসুরমর্দিনী দেখতে দূরদর্শন চালিয়ে বসে পড়ত বাঙালি । মা দুর্গার সঙ্গে অসুরের লড়াই দেখতে হবে যে । আর সেইসময় বেশিরভাগ অসুর রূপে দেখা যেত অমল চৌধুরীকে । অশোকনগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অমল চৌধুরী (Actor Aman Chowdhury) । এলাকায় তিনি 'অমল অসুর' নামেই পরিচিত । কিন্তু, একসময় মাথা ভর্তি কোঁকড়া চুল, পেশিবহুল বিরাট আকারের চেহারায় দেখা মানুষটার শরীর ভেঙে গিয়েছে । দীর্ঘদিন হয়ে গেল হাতে কোনও কাজ নেই । চরম অভাবে দিন কাটছে তাঁর ।
প্রথমে অমল চৌধুরী 'মহালয়া'-র অসুরের ভূমিকায় অভিনয় করতেন । পরে তাঁকে যমরাজের চরিত্রেও দেখা গিয়েছে । শুধু মহালয়া নয়, পরবর্তীকালে নামী অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে ধারাবাহিক, সিনেমায় কাজ করেছেন । কিন্তু, একটা সময়, যিনি অভিনয়ের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন,সেই শিল্পী মানুষটার অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ । দু'বেলা দু'মুঠো ঠিকমতো খাবার জোটে না তাঁর । স্টুডিও পাড়া থেকে কেউ তাঁকে ডাকে না । কেউ খোঁজ রাখেন না । আত্মীয়রাও তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়েছেন । বাড়ির অবস্থা ভগ্নপ্রায় । অসুস্থ দিদিকে নিয়ে কোনওরকমে দিন কাটান । সরকারের পক্ষ থেকেও কোনও সাহায্য করা হয়নি বলে অভিযোগ । হাতেগোনা কয়েকটি আঁকার টিউশনি করেই যা আসে,তা দিয়েই কোনওরকমে চলে দু'জনের সংসার।
মহালয়ার দিনগুলো এলেই তাঁর মন খারাপ হয়ে যায় । মনে পড়ে যায়, তাঁর নিজের দিনগুলোর কথা । অমল চৌধুরী জানাচ্ছেন, তিনি অভিনয় করতে চান, মানুষের কাছে আবার পৌঁছতে চান । তাই তিনি চাইছেন,কেউ তাঁর পাশে দাঁড়াক, অভিনয়ের একবার সুযোগ যেন দেওয়া হয় তাঁকে ।