গত বিধানসভা ভোটের কিছু দিন আগে থেকেই দু’জনের রাজনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে। কার্যত মুখ দেখাদেখি বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে এক সরকারি বৈঠক সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পারস্পরিক সাক্ষাতের সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের পদটি ফাঁকা। ওই পদটির পাশাপাশি লোকায়ুক্ত এবং তথ্য কমিশনের চেয়ারম্যান পদেও নিয়োগ প্রয়োজন। সেই নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে সোমবার রাজ্য সরকারের তরফে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে বৈঠকটি হবে। সেখানে রীতি অনুযায়ী উপস্থিত থাকার কথা মুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা এবং বিধানসভার স্পিকারের। উল্লেখ্য, এই ধরনের বৈঠকগুলি সাধারণত বিধানসভা চত্বরে হয়ে থাকে। এই প্রথম এই ধরনের বৈঠক বিধানসভার বাইরে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অনুষ্ঠিত হবে। বিধানসভা থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সাসপেন্ড হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। বিধানসভায় বৈঠক ডাকা হলে সেক্ষেত্রে তিনি উপস্থিত থাকতে পারতেন না। তাই মুখ্যমন্ত্রী স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে নবান্নে বৈঠকটি ডাকার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
সেই নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় থেকে শুভেন্দু ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর তৃণমূল কংগ্রেসের সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ। পরবর্তীতে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর রাজ্য়ে তাঁর নেতৃত্বে অধীর চৌধুরির গড় মুর্শিদাবাদ, গণিখানের মালদা সহ একাধিক জেলায় বিরোধীদের কার্যত সাফ করে দিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু তারপর দুই জনের সম্পর্কের সেই তালমিল ক্রমশ বেসুরো হয়ে ওঠে। একদা মমতার ডান হাত এবং অন্যতম বিশ্বস্ত সৈনিক শুভেন্দু অধিকারী এখন বিজেপিতে। বৈরিতা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, গত বিধানসভা নির্বাচনে নেত্রীকে নন্দীগ্রামে ভোটে দাঁড়ানোর জন্য ওপেন চ্যালেঞ্জও জানিয়ে ছিলেন শুভেন্দু। সেই ভোটে জেতেন শুভেন্দু যদিও তা নিয়ে বিতর্ক এখনও থামেনি।
সোমবারের বৈঠকে শুভেন্দু যোগ দেবেন কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়। তাঁর তরফে এই বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু যদি তিনি বৈঠকে যোগ দেন তাহলে প্রাক্তন নেত্রীর সঙ্গে সরকারি কথোপকথনের বাইরে গিয়ে অন্য কোনও বিষয়ে আলাপচারিতা হবে কি না তা নিয়ে এখন মুখিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল।