বিজেপি (BJP) এখন দেশের সবচেয়ে ধনী দল, অথচ রাজ্য বিজেপির (West Bengal BJP) নাকি এখন নুন আনতে পান্তা ফুরনোর দশা! বৃহস্পতিবার দিল্লিতে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার (JP Nadda) সঙ্গে দেখা করে এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। চেয়েছেন আর্থিক সাহায্য।
রাজ্য দলীয় সংগঠনের বেহাল দশা নিয়ে জে পি নাড্ডার সঙ্গে বৃহস্পতিবার আলোচনায় বসেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, আলোচনায় সংগঠনের বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নাড্ডা। এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির তহবিলের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। দলের রাজ্য নেতারা নাড্ডাকে আর্থিক সংকটের বিষয়টি জানিয়ে সাহায্যের আবেদন করেন। বলা হয় আর কিছুদিন পরেই শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ ও পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রচারের জন্য যথেষ্ট অর্থের প্রয়োজন, কিন্তু এই মুহূর্তে দলের তহবিল কার্যত তলানিতে। সেজন্য দ্রুত রাজ্য বিজেপিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার অনুরোধ করে রাজ্য নেতৃত্ব।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্য সফরে এসে সংগঠনের বেহাল পরিস্থিতির বিষয়টি বুঝতে পারেন অমিত শাহ (Amit Shah)। তিনি দিল্লি ফিরেই জেপি নাড্ডার সঙ্গে বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন এবং তাঁকেও বাংলা সফরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সূত্রের খবর, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষের (BL Santosh) সঙ্গে বাংলা সফরে আসার পর সংগঠনের বেআব্রু ছবিটি নাড্ডার কাছেও ধরা পড়ে। ইতিপূর্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও সংঘের কাছে সংগঠন নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের পাঠানো রিপোর্টে যে অনেকটাই জল মেশানো ছিল, তা বুঝতে সময় লাগেনি নাড্ডার। কারণ বাংলা সফরে এসে সংগঠনের বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের পাঠানো রিপার্টের একাধিক অসঙ্গতি তিনি খুঁজে পান। এরপরেই রাজ্য নেতাদের দিল্লিতে তলব করে এবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে আলোচনার জন্য রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ সহ, অমিত মালব্য, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও অমিতাভ চক্রবর্তীকে ডেকে পাঠানো হলেও অজ্ঞাত কারণে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) যাননি। বৃহস্পতিবার যখন দিল্লিতে রাজ্য বিজেপির সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আলোচনা চলছে তখন দিলীপ ঘোষকে দেখা যায় বিধানসভায় বিধায়কদের সঙ্গে গল্পগুজবে ব্যস্ত থাকতে। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি জানান, ব্যস্ততার কারণেই তিনি দিল্লি যেতে পারেননি, যদিও রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলে বিষয়টি নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য নেতৃত্বের বাকি নেতাদের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার কারণেই কি তাঁর এই সিদ্ধান্ত?
সূত্রের খবর, সুকান্তরা দলের আর্থিক সংকটের কথা বলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে আর্থিক সাহায্য চাইলেও আলোচনার সিংহভাগ হয়েছে রাজ্যে দলের সংগঠন কীভাবে জোরদার করা যায় সেই বিষয়ে। উল্লেখ্য, সব রাজ্যেই সংঘের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বিজেপির সংগঠন পরিচালিত হয়। কিন্তু বিজেপিরই একটা অংশের অভিযোগ, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে সংঘের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে বঙ্গ বিজেপির। যেভাবে রাজ্যে দল পরিচালিত হচ্ছে তা নিয়ে একাধিকবার সংঘের মুখপত্রেও সমালোচনা করা হয়েছে এবং সতর্ক করা হয়েছে যে, এভাবে বাংলায় দল পরিচালিত হলে ভবিষ্যতে মানুষের সমর্থন ধরে রাখা কঠিন হবে। সংঘের তরফে করা সেই ভবিষ্যৎবাণী মিলে যাচ্ছে বলে সম্প্রতি বাংলার সংঘ পরিবারের তরফেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে একটি রিপোর্ট দেওয়া হয়। এরপরই বাংলা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নড়েচড়ে বসেন।