ঋষভ পন্থ। প্রাক্তন থেকে বর্তমান, কেউ কোনও দিন তাঁর গুণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। বরং ভারতীয় ক্রিকেটে অন্যতম স্তম্ভ বলেছিলেন অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটার। কিন্তু তিনি কেন স্পেশাল, তা যেন চিন্নাস্বামীতে প্রমাণ করলেন ঋষভ পন্থ। বেঙ্গালুরু টেস্টে হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন। হাঁটু ফুলে গিয়েছিল। মনে করা হয়েছিল, আগামী টেস্টগুলিতে দলেই থাকতে পারবেন না। তৃতীয় দিন উইকেটকিপিং করতে মাঠেও দেখা যায়নি। চতুর্থ দিন সকালেই চমক। শুক্রবার ইনিংসের শেষ বলে বিরাট কোহলি ফেরেন। চার নম্বরে নেমে তাঁর ব্যাট থেকে এল ৯৯ রানের ঝকঝকে ইনিংস। ও রাউর্কের ডেলিভারিতে ফিরলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬২ রানে শেষ ভারতের ইনিংস। টেস্ট জিততে নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ১০৭।
তৃতীয় দিনের শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান তোলে টিম ইন্ডিয়া। ক্রিজে ছিলেন সরফরাজ খান। ইনিংসের শেষ বলে এসে আউট হন বিরাট কোহলি। ৭০ রান আসে বিরাটের ব্যাটে। চতু্র্থদিন সকালে সরফরাজের সঙ্গে আসেন পন্থ। তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে দুরন্ত ব্যাটিং। প্রথম সেশনে সেঞ্চুরি পান সরফরাজ খান। আর কেরিয়ারের দ্বাদশ হাফসেঞ্চুরি করেন পন্থ। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস। চিন্নাস্বামীতে এক রানের জন্য হাতছাড়া হল ঋষভ পন্থের সেঞ্চুরি।
শনিবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বিরল রেকর্ড গড়েন ঋষভ পন্থ। ভারতীয় উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে মহেন্দ্র সিং ধোনির রেকর্ড ভাঙলেন। টেস্ট ক্রিকেটে ৬২টি ইনিংস খেলে দ্রুততম ২৫০০ রান করে ফেললেন পন্থ। এই রান করতে মহেন্দ্র সিং ধোনি নেন ৬৯টি ইনিংস। মাঠে প্রতিপক্ষ বোলারদের মানসিকতা বুঝে, সঠিক সময় সঠিক শট নিয়ে বড় ইনিংস তৈরি করলেন। পন্থের এই ইনিংসের প্রশংসা করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
২০১৮ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় ঋষভ পন্থের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যোগ দিতেই পন্থকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। বিদেশ সফরে, অজানা-অচেনা পরিস্থিতিতে পন্থের মতো বিচক্ষণতা দেখাতে পারেননি অনেক তাবড় তাবড় ক্রিকেটার। আগামী মাসে শুরু হবে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য এই সিরিজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অস্ট্রেলিয়া টিমের প্রত্যেক ক্রিকেটারই পন্থকে সমীহ করেন। এই সিরিজে পন্থের থাকা ভারতের জন্য খুবই জরুরি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে সেঞ্চুরি। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ৯৯ রান। অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়ার আগে ফর্মে থাকা পন্থকে পাবেন তো রোহিত অ্যান্ড কোং! নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আগামী টেস্টের আগে সেদিকে হয়তো নজর দেবে বিসিসিআই।