কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতলেন বাংলার অচিন্ত্য শিউলি (Achinta Sheuli wins gold)। ভারোত্তোলনে ৭৩ কেজি বিভাগে সোনা জিতলেন তিনি। সোনা জেতার পাশাপাশি তিনি রেকর্ডও গড়েন। অচিন্ত্য একাদশতম বাঙালি যিনি কমনওয়েলথে সোনা জিতলেন।
রবিবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময়) ৭৩ কেজি বিভাগে অচিন্ত্য স্ন্যাচিংয়ে রেকর্ড গড়েন। প্রথম চেষ্টায় তোলেন ১৩৭ কেজি। পরের বার তোলেন ১৪০ কেজি এবং শেষে ১৪৩ কেজি তোলেন। বাকি প্রতিযোগীদের মধ্যে শুধু মালয়েশিয়ার মুহম্মদ এরি শেষ বারের চেষ্টায় ১৩৮ তুলেছিলেন।
Monkeypox:কেরলে যুবকের মাঙ্কিপক্সে মৃত্যু? নমুনা পরীক্ষার জন্য় পাঠানো হল
এছাড়া ক্লিন এবং জার্ক বিভাগে প্রথম চেষ্টায় অচিন্ত্য তোলেন ১৬৬ কেজি। পরের বার ১৭০ কেজি তুলতে গিয়ে ব্যর্থ হন। কিন্তু তৃতীয় বারের চেষ্টায় সেই ওজনও তিনি তুলে নেন। সব মিলিয়ে মোট ৩১৩ কেজি তুলে গেমসে রেকর্ড গড়েন ।
পদক জয়ের পর অচিন্ত্য বলেন, ‘‘আমার লড়াই ছিল নিজের সঙ্গে। সোনা জিততে আসিনি। নিজেকে টপকে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। সেটা পারিনি বলে খারাপ লাগছে। এই পদক আমি আমার দাদা এবং কোচকে উৎসর্গ করছি। বাবা মারা যাওয়ার পর দাদা আমার জন্য সব কিছু করেছে। নিজে ভারোত্তোলন করত। আমাকে তৈরি করার জন্য ছেড়ে দিয়েছে।’’
নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা অচিন্ত্যর কাছে এই সোনা জয়ের লড়াইটা ছিল যথেষ্ট কঠিন। হাওড়ার দেউলপুরে অচিন্ত্যদের মাটির দেওয়ালের বাড়ি, মাথায় টিনের ছাদ। বাবা ভ্যান চালাতেন, তিনি মারা গেছেন প্রায় ৯ বছর আগে। মা জরির কাজ করে সংসার চালান কোনওক্রমে। সাপ্তাহিক মাত্র রোজগার পাঁচশো টাকা। তা-ও নিয়মিত নয়। দাদা অলক দমকল দফতরের অস্থায়ী কর্মী। কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপের দু’টি বিভাগে জোড়া সোনা, যুব এশিয়ান চ্যাম্পিনশিপে রুপো, বাংলার হয়ে জেতা তিনটি সোনা-সহ মোট আটটি পদক ঝুলছে ঘরের এক কোণে পেরেকে। একটা আলমারিও নেই সেই পদকগুলি সাজিয়ে রাখার। নিরন্তর অভাবের এই সংসারে শুধু জেদ ও পরিশ্রমকে বাজি রেখেই সোনার দৌড়ে সফল অচিন্ত্য।