রূপকার মেসি। নায়ক আলভারেস। আট বছর পর বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনা। প্রথম সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে চার বছর আগের রাশিয়ার দেনা শোধ করলেন লিও মেসি। ম্য়াচের ৩৪, ৩৯ এবং ৬৯ মিনিটে গোল আর্জেন্টাইনদের। এরমধ্যে জোরা গোল করে নায়ক বাইশ বছরের হুলিয়ান আলভারেজ। প্রথম গোলের ক্ষেত্রেও পেনাল্টি আদায় করেছিলেন পেপ গুয়ার্দিওয়ালার এই ছাত্র। সেখান থেকেই এদিন ম্য়াচ শুরু করেছিলেন লিও মেসি। সামনে এই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা গোলকিপার ডমিনিক লিভাকোভিচ। যাঁকে ক্রোটদের লেভ ইয়াসিন বলা হচ্ছিল। সেই লিভাকোভিচ এদিন ব্যর্থ বিশ্ব ফুটবলের রাজকুমারের বাঁ-পায়ের কাছে। টপ কর্নারে বুলেট। আর্জেন্টিনার লিড, প্রস্থানের পথে লুকা মদ্রিজ ও তাঁর ক্রোয়েশিয়া।
ব্রাজিল ম্য়াচ জিতেই আর্জেন্টিনা বধের নীল-নকশা তিনি তৈরি করে ফেলেছিলেন। প্রথম সেমিফাইনালের আগে এমনটাই দাবি করেছিলেন ক্রোয়েশিয়ার কোচ ডালিচ। কিন্তু লুসাইল স্টেডিয়ামে এদিন শুরু থেকে তাঁর নীল-নকশা ধরে ফেলে আর্জেন্টিনা। চার-চার-দুই ছকে দল সাজিয়ে ক্রোয়েশিয়ার খেলাই তাঁদের ফিরিয়ে দিলেন রডরিগো ডিপল, ম্য়াক-অ্য়ালেস্টার এবং এনজো ফার্নান্ডেজরা। অ্যাকুনা নেই। তাঁর জায়গায় পারেডেজকে ব্লকার হিসাবে কাজে লাগালেন স্কোলানি। পিছন থেকে সার্পোট দিলেন ওটামেন্ডি এবং ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো। তাতেই দাঁড়ি পড়ে গেল ক্রোটদের খেলায়। ব্রাজিল ম্য়াচেও দুটি উইংকে ব্যবহার করেছিলেন ক্রোটরা। কারণ, ওই ম্য়াচে তাঁরা মাঝমাঠে রাজত্ব করেছিলেন। কিন্তু এই ম্য়াচে সেই সাম্রাজ্য ছিনিয়ে নিল আর্জেন্টিনা। জবাব দিল কাউন্টার অ্য়াটাকে গিয়ে। যার নিট ফল ৩৯ মিনিটে আলভারেজের প্রথম গোল। প্রায় ৬৫ গজ দৌড়ে ফিনিশ করলেন ম্য়ানচেস্টার সিটির এই ভবিষ্যতের তারকা।
ম্য়াচের বয়স তখন ৬৮ মিনিট। ক্রোট মাঝমাঠের বাঁ-দিক থেকে একটা বল পিক-আপ করলেন তিনি। সাইড লাইন দিয়ে শুরু করলেন সেই বিখ্য়াত দৌড়। তাঁর গায়ের উপর হাঁটুর বয়সি ক্রোট ডিফেন্ডার গাভারডিওল। প্রায় চল্লিশ গজ একাই দৌড়ে ঠিক বক্সের উপর প্রথমে একটা ইনসাইড, তারপর একটা আউটসাইড। এই দুই বাঁকেই ভরাট ক্রোট ডিফেন্স, ভেঙে গেল ডিনামাইড ফাটানো পাহাড়ের মতো। বলটা সাজিয়ে দিলেন আলভারেজকে। যেটা গোল ছাড়া আর কিছুই হতে পারত না। এটাই তো লিও মেসি। ৬৯ মিনিট। আর্জেন্টিনা - ৩, ক্রোয়েশিয়া - ০। বিদায় লুকা মদ্রিজ। ফাইনালে বিশ্ব ফুটবলের আসল এলএম টেন। আট বছর পর এই নিয়ে ৬ বার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল আর্জেন্টিনা। আর একটা ম্য়াচ লিও। কাপ চাই। শুধু বুয়েন্স আয়ার্স, নয় এবার মেসির কাছে আর্তি এই বাংলার।