আকাশে উড়েছেন লিও মেসি। কাতার থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে এই ছবিটাই ভেসে উঠেছিল বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালের আগে। শাকিন রোসারিও। লিওনেল আদ্রেয়াস মেসির আঁতুর ঘর। সত্য়িই আকাশে উড়েছেন তিনি। যার প্রমাণ এদিন পেল লুসাইল স্টেডিয়াম। ৬৮ মিনিটে ক্রোট ডিফেন্ডারকে গায়ে নিয়ে তিনি যখন ছুটলেন, তখন এক লহমায় সেই ছবিটা মনে পড়ে গেল। ৩৬ বছর আগের মেক্সিকো সিটি। সেটাও ছিল এমনই এক বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। ৬৩ মিনিটে বেলজিয়াম ডিফেন্স চিড়ে ছুটে যাচ্ছেন এক চোটখাটো চেহারার ভদ্রলোক। তিনি দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। মারাদোনা ফিনিশ করেছিলেন। আর ৩৬ বছর পর তাঁর থেকে ১৪ বছরের ছোট হুলিয়ান আলভারেসের জন্য বলটা সাজিয়ে দিলেন ৩৫ বছরের লিও মেসি।
লুসাইল যেন তাঁর প্রেমে পড়ে গিয়েছে। এই মাঠ থেকে হেরেই বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল আর্জেন্টিনার। অভিশপ্ত সৌদি আরব ম্য়াচেও গোল করেছিলেন মেসি। সেই লুসাইলে আবার পেনাল্টি থেকে গোল করে গোল্ডেন বুটের দৌড়ে কিলিয়ান এমবাপেকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিলেন। পাঁচ দিন পর এই মাঠেই জীবনের শেষ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে নামবেন। তার আগে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গোল করে আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে ভেঙে দিলেন গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার ১০ গোলের রেকর্ড। সামনে রয়ে গেলেন শুধু পেলে।
কথা দিয়ে এসেছেন। এবার বিশ্বকাপ নিয়ে ফিরবেন। তাই টুর্নামেন্ট যত গড়াচ্ছে ততই নিজের খোলস ছাড়ছেন। ক্রোয়েশিয়া ম্য়াচেও তাঁর অবদান একটি গোল ও অন্যটিতে সাহায্য করা। এ যাবৎ এই বিশ্বকাপে প্রতিটি ম্য়াচ দুই গোলে জিতেছে আর্জেন্টিনা। স্পেশাল হয়ে থাকল সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়া ম্য়াচ। ১৯৩০ সালের পর এই প্রথম আর্জেন্টিনা কোনও বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল জিতল ৩-০ গোলে। আজ থেকে ১৬ বছর আগে লিও মেসির প্রথম আন্তর্জাতিক গোল এসেছিল এই ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে। এদিন তাঁর গোলেই কার্যত ছুটি হয়ে গেল গতবারের রানার্সদের। সত্যিই আকাশে উড়েছে লিও মেসি। স্বপ্ন দেখাচ্ছেন কাতার থেকে বিশ্বকাপ নিয়ে ফেরার।