অঝোরে কাঁদছেন কোচ লিওনেল স্কোলানি। তাঁকে নিজের বুকে টেনে নিলেন মেসি। কাতার বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনাল শেষে এটাই ছবি হয়ে থেকে গেল। মাঠে তখনও আটবছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার সেলিব্রেশন। তার ফাঁকেই একা মাঠ থেকে বেরিয়ে ড্রেসিং রুমে ঢুকে পড়লেন মেসি। হয়তো তাঁরও মনে হচ্ছে এ যেন বত্রিশ বছর আগের সেই চিত্রনাট্য। ১৯৯০, রোম। বিশ্বকাপের প্রথম ম্য়াচ ক্যামারুনের কাছে ১-০ গোলে হেরে গেল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মারাদোনার আর্জেন্টিনা। এরপর বাকিটা ইতিহাস। ৩২ বছর পর কাতার যেন আর্জেন্টিনার ফুটবল ভাগ্যে এখনও পর্যন্ত সেই চিত্রনাট্যই লিখে চলেছে। প্রথম ম্য়াচে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ২-১ গোলে হার। কথা উঠল গোটা দলকে নিয়ে। বিভিন্ন কোণ থেকে প্রশ্ন করা হল মেসির আর্জেন্টিনাকে নিয়ে। দলের ডিফেন্স নিয়ে। প্রশ্ন উঠল আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কোলানির ফুটবল বুদ্ধি নিয়ে।
২২ নভেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর। লুসাইল স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়েই লিও মেসি ও তাঁর আর্জেন্টিনা জবাব দিল সমালোচকদের। যে ডিফেন্স নিয়ে এত প্রশ্ন, ক্রোয়েশিয়া ম্য়াচে ওটামেন্ডি অ্য়ান্ড কোম্পানি সবাইকে চুপ করিয়ে দিল। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ক্রোটদের ঢঙে ম্য়াচ খেলে, সমালোচকদের জবাব দিলেন আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কোলানিও। আর লিও মেসি ? এই টিমের তিনিই শেষ কথা। ১৮ ডিসেম্বর পরবর্তী সময়ে হয়তো তিনি এই দলের সঙ্গে থাকবেন না। কিন্তু কাতার থেকে আর্জেন্টিনা ফুটবলের পরবর্তী প্রজন্মকে তিনি তৈরি করে দিলেন। রডরিগো ডিপল, ম্য়াক-অ্য়ালেস্টার, এনজো ফার্নান্ডেজ এবং সর্বপরি হুলিয়ান আলভারেজরাই হয়ে উঠলেন মারাদোনার দেশের ফুটবল সম্পদ।
হাতে রইল আর একটা ম্য়াচ। প্রতিপক্ষ কে, তা নিয়ে ভাবছে না আর্জেন্টিনা। মেসিকে ভাবাচ্ছে আট বছর আগের মারাকানার সেই স্মৃতি। স্মৃতি নয়, বর্তমানেই থাকতে পছন্দ করে এই আর্জেন্টিনা দল। তাই আসছে রবিবার এক নতুন দিন। এক নতুন আর্জেন্টিনাকে দেখার এখন থেকে প্রতিশ্রুতি লিওনেল মেসি ও তাঁর আর্জেন্টিনার।