মাত্র ১৯ বছর বয়সে বাংলার ফুটবল(Football) জগতে পা রেখেছিলেন তরুণ সুভাষ ভৌমিক(Subhash Bhowmik)। আর তারপর দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর ধরে দুই প্রধানের ভরসা ছিলেন ময়দানের 'ভোম্বল দা'। তাঁকে নিয়ে মোহন-ইস্টের দড়ি টানাটানি চলত অহরহ। অবশেষে ১৯৭৯ সালে অবসর নেন ফুটবলার সুভাষ ভৌমিক(Subhash Bhowmik)।
ক্লাব ক্যারিয়ারে মোট ২৭টি ট্রফি জেতা সুভাষ মোহনবাগানকে(Mohun Bagan) এনে দিয়েছিলেন ১৬টি ট্রফি। ইস্টবেঙ্গল(East Bengal) পেয়েছিল ১১টি ট্রফি।এর পাশাপাশি বাংলা এবং দেশের হয়েও ট্রফি জিতেছেন সুভাষ ভৌমিক(Subhash Bhowmik)। অল্প বয়েসে পুত্রের মৃত্যুও টলাতে পারেনি এই একরোখা মানুষটিকে। তাঁর কাছে ফুটবলই(Football) ছিল তাঁর জীবনীশক্তি। তাই সমস্যায় পড়লেই আঁকড়ে ধরেছেন ফুটবলকে।
আরও পড়ুন- Subhash Bhowmick death : সুভাষ ভৌমিকের প্রয়াণে শোকবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, নিমতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য
তবে ফুটবলার সুভাষকে নিয়ে যত না বেশি উদ্দীপনা ছিল মানুষের, ফুটবল কোচ হিসেবে 'ভোম্বল দা' তার চেয়েও বেশি স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের(Football lover) কাছে। ডাকাবুকো কোচ সুভাষ জানতেন দলকে কীভাবে এক সুতোয় বেঁধে রাখতে হয়। তাই খাতায়-কলমে দুর্বল দল নিয়েও সাফল্য পেয়েছেন সুভাষ ভৌমিক(Subhash Bhowmik)।
সুব্রত ভট্টাচার্য(Subrata Bhattacharya) থেকে গৌতম সরকার(Goutam Sarkar), শ্যাম থাপা(Shyam Thapa) থেকে অ্যালভিটো-ডি-কুনহা। প্রত্যেকের গলাতেই ঝরে পড়েছে ক্ষেদ। মৃত্যুকে ভবিতব্য জেনেও তাঁরা সকলেই প্রশ্ন তুলেছেন, 'জীবন এতো ছোটো টেনে?' সুভাষ ভৌমিকের(Subhash Bhowmik) ম্যানেজমেন্ট এবং প্রশাসনিক দক্ষতা ছিল অতুলনীয়। নিজের স্বকীয়তার গুণেই ময়দানের বহু ফুটবলারের থেকে ছিলেন একটু অন্যরকম। মানুষকে বড় আপন করে নিতে পারতেন সুভাষ। দীপেন্দু বিশ্বাসের(Dipendu Biswas) কথায়, "যে কোনও সময়, যে কোনও প্রয়োজনে খেলোয়াড়দের পাশে থাকতেন সুভাষ ভৌমিক। খারাপ সময়েও ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস জোগাতেন তিনি।" অ্যালভিটো জানালেন, "আমার কাছে পিতৃসম ছিলেন সুভাষ ভৌমিক। শুধু ভালো কোচই নয়, একজন ভালো মানুষ ছিলেন তিনি।"
বরাবরের স্বাধীনচেতা, একরোখা মানুষটি কখনও কারও সঙ্গে আপোস করেননি। ফুটবলারদের যেমন ভালোবাসতেন, আবার ম্যাচ চলাকালীন মাঠেই তর্কেও জড়িয়েছেন সমর্থকদের সঙ্গে। প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে কলকাতায় খেলতে এসে ভালোবেসে ফেলেছিলেন তিলোত্তমাকে। বরাবরের হার না মানা, একরোখা সুভাষ 'ভোম্বল' ভৌমিক(Subhash Bhowmik) অবশেষে হার মানলেন। শনিবার সকালেই পাড়ি দিলেন ‘না ফেরার দেশে’।