১০০ মিনিট পেরিয়ে শেষ বাঁশি বাজল যুবভারতীতে। শেষ হল ভারত-কুয়েত ম্যাচ। আর সেইসঙ্গে বৃহস্পতিবারের রাতে একটা বিষণ্ণতা ছেয়ে গেল ক্রীড়াঙ্গনে। এক হারানো যন্ত্রণা। এক না থাকার যন্ত্রণা। হ্যাঁ, ঠিক সুনীলকে হারিয়ে বিশ্বকাপের যোগ্যতার ম্যাচে কুয়েতকে রুখে দিল ভারত। ম্যাচ শেষে কর জরো গোটা মাঠ ঘুরলেন। কলকাতা তাঁকে কুর্নিশ করল। ফিরে এলেন সেন্টার সার্কেলে। যেখান থেকে তিনি রোজ কিক-অফ করতেন। এই রাতে পর তা অতীত হয়ে গেল।
গ্যালারিতে তখন বাবা-মায়ের সঙ্গে স্ত্রী সোনম। তাঁদের সামনে পেশাদারিত্বকে ভুলে গেলেন। কেঁদে ফেললেন শিশুর মতো। আজ আর তিনি পারলেন না। তাঁর শুরুর শহরে ফুটবল জীবন শেষ করে সুনীল ছেত্রী যেন রক্ত-মাংসের মানুষ। মাঠ ছাড়ার আগে তাঁকে গার্ড অফ অনার দিল ভারতীয় দল। প্রিয় ছাত্রের শেষবার মাঠ ছাড়ার আগে আদর করলেন কোচ ইগর স্তিমাচ।
কান্না তখনও থামল না। যে সুনীলকে ভারতীয় ফুটবল চিনত একজন লড়াকু সেনাপতি হিসাবে। জীবনের শেষ ম্যাচে সেই সুনীলকে কলকাতা দেখল বাস্তবের মাটির সঙ্গে। তিনি এলেন, দেখলেন এবং ৬০ হাজারের যুবভারতীকে জয় করে, জীবন শেষ ম্যাচ খেলে টানেল দিয়ে ড্রেসিং রুমে ঢুকে গেলেন।
ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান,মহমেডান স্পোর্টিং- সবাই তাঁকে এদিন সংবর্ধনা দিল। ভারত অধিনায়কের বিদায় বেলায় পাশে দাঁড়ালেন তাঁর একদা সতীর্থ আইএম বিজয়ন থেকে অ্যালভিটো ডি কুনহা। ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে থেকে মেহতাব হোসেন। ২০০৫ সালে সাফ কাপ। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। শুরু হয়েছিল তাঁর আন্তর্জাতিক ফুটবল জীবন। ১৯ বছরের বৃত্ত শেষ হল ৬ জুন ২০২৪। প্রতিপক্ষ কুয়েত।
অর্জুন, পদ্মশ্রী, খেলরত্ন। ঝুলিতে থেকে যাবে ১৫১ ম্যাচে ৯৪ গোলের নজির। থেকে যাবে ১১টি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট জয়ের পরিসংখ্যান। কিন্তু আজকের পর থেকে তিনি প্রাক্তন। তিনি সুনীল ছেত্রী।