প্যারিস অলিম্পিক। চার বছরের অপেক্ষা শেষ। এবার সমাপ্তির পথে অলিম্পিক গেমস। গত চার বছরের লড়াইয়ে ইতি। ৬টি পদক জিতে এবারের অলিম্পিক অভিযান শেষ ভারতের। মেডেল ট্যালির হিসেবে ৭২তম দেশ ভারত। টোকিও অলিম্পিকে ৭টি পদক জিতেছিল ভারত। এবার তার থেকে একটি কম। একটি রুপো ও পাঁচটি ব্রোঞ্জ পদক ঘরে এনেছেন অ্য়াথলিটরা। প্রত্যাশা করা হয়েছিল, এবার ১০টি পদক তুলে সব রেকর্ড ভেঙে যাবে। কিন্তু পরপর স্বপ্নভঙ্গ। অলিম্পিক থেকে খালি হাতেই ফিরেছেন তারকারা। কেমন ছিল এবারে অলিম্পিকে ভারতের লড়াই!
এবার অলিম্পিকে ইতিহাস তৈরি করেছেন শুটার মনু ভাকর। স্বাধীনতার পর তিনি প্রথম ভারতীয়, যার হাত ধরে একই অলিম্পিকে দুটি পদক পেয়েছে ভারত। ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে ব্যক্তিগত ও মিক্সড ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতেছেন তিনি। এবার অলিম্পিকের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মনুর হাতেই থাকবে ভারতের তেরঙা। আর মিক্সড ইভেন্টে মনুর সঙ্গে পদক জিতেছেন সরবজ্যোত সিং। আর শুটিং ইভেন্ট থেকে আরও একটি পদক এনে দিয়েছেন স্বপ্নিল কুশালে। ছেলেদের ৫০ মিটার রাইফেল ইভেন্ট থেকে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন তিনি। কুস্তির ৫৭ কেজি ফ্রি-স্টাইল ইভেন্টে দেশকে ব্রোঞ্জ এনে দিয়েছেন আমান শেহরায়ত।
এবার অলিম্পিকে দেশকে সোনা এনে দেওয়ার কাছাকাছি ছিলেন একজনই। নীরজ চোপড়াকে নিয়ে তাই স্বপ্ন দেখেছিল দেশবাসী। কিন্তু অলিম্পিক এমনই এক ইভেন্ট, এখানে স্বপ্নভঙ্গ হওয়া নতুন বিষয় নয়। জ্যাভলিনে দেশকে রুপো এনে দিয়েছেন নীরজ। আর এই ইভেন্টে সোনা পেয়েছেন পাকিস্তানের আরশাদ নাদিম। এবার নীরজের থ্রো ডিসট্যান্স ছিল ৮৯.৪৫ মিটার। এই মরশুমের সেরা থ্রো ছিল তাঁর। কিন্তু আরশাদ নাদিমের থ্রো হতাশ করে ভারতকে। ৯২.৯৭ মিটার ডিসট্যান্স ছিল তাঁর।
এবার ভারতীয় হকি টিমের কাছেও প্রত্যাশা ছিল সোনা জয়ের। টোকিও অলিম্পিকের পর এবারও ব্রোঞ্জ জয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল টিম হকি টিমকে। এবারই শেষ অলিম্পিক ছিল পিআর শ্রীজেশের। চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি অধিনায়ক হরমনপ্রীত সিংও। ১৯৭২ সালে শেষবার সোনা জিতেছিল টিম ইন্ডিয়া। এবারও সেমিফাইনালে হারতে হয় তাঁদের। ব্রোঞ্জের ম্যাচে জিতে পদক নিশ্চিত করে টিম ইন্ডিয়া।
তবে প্রাপ্তির ভাঁড়ার শূন্য যাঁদের, তাঁদের সংখ্যাটাই এবার অলিম্পিকে বেশি। পিভি সিন্ধু, লক্ষ্য সেন, মনিকা বাত্রা, নিখাত জারিন, এদের কাছে পদকের প্রত্যাশা করেছিল দেশ। প্রত্যেকেই তুখোড় ফর্মেও ছিলেন। আর পদক জয়ের কাছাকাছি পৌঁছেও এখনও ঝুলে ভিনেশ ফোগাতের ভাগ্য। ফাইনালে উঠেও খেলতে পারেননি তিনি। তিনি পদক পাবেন কিনা, তা এখনও ক্রীড়া আদালতের শুনানির উপর নির্ভর করছে। গতবারের পদকজয়ী লাভলিনা বরগোঁহাইও এবার খালি হাতে ফিরেছেন। মীরাবাই চানুও পদক আনতে পারেননি। দুরন্ত ফর্মে থেকেও ছিটকে গিয়েছেন চিরাগ শেট্টি ও সাত্ত্বিক সাইরাজ রাঙ্কারেড্ডির ব্যাডমিন্টন জুটি।