তাঁর টেনিস শুধু ছাঁচে ঢালা টেনিস-ব্যাকরণকেও বেশ খানিকটা বদলে দেয়নি। তার সঙ্গে বদল এনেছিল বিশ্ব ক্রীড়া মানচিত্রে মহিলাদের অবস্থানেও। গত শতাব্দীর শেষ লগ্নে ১৯৯৯ সালে যখন প্রথমবার গ্র্যান্ডস্ল্যাম জিতছেন সেরেনা, তখনও কোর্টে দাপাচ্ছেন স্টেফি গ্রাফ, ভেনাস উইলিয়ামস বা বিস্ময়-টিনএজার মার্টিনা হিঙ্গিস। কিন্তু, 'পাওয়ার টেনিস'কে ব্যবহার করে যেভাবে একের পর এক ম্যাচে কোর্টে ফুল ছড়িয়েছেন সেরেনা, তা ঠিক ওভাবে আর কেউ কখনও পারেননি।
আড়াই দশকের বেশি সময় ধরে সেরেনার প্রতিটি সার্ভিস, ফোরহ্যান্ড, ব্যাকহ্যান্ড শাসন করেছে মহিলা টেনিসকে। জবাব দিয়েছে পুরুষদের টেনিসকেও। আধুনিক পাওয়ার টেনিস যে মহিলারাও খেলতে পারেন, তা প্রমাণ করে দিয়েছেন সেরেনা। প্রমাণ করেছে তাঁর দুরন্ত গতির শট, মুহূর্তে কোর্টের অন্য প্রান্তে পৌঁছে যাওয়ার ক্ষিপ্রতা।
তিনি হারতে ঘৃণা করতেন। কোর্টের সেরেনা বিদায় মানতেন না। কোর্টের সেরিনা শেষ না হওয়ার আগে থামতেন না। তবু থামলেন। নিজের শর্তে। নিজেকে পর্বত সমান উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করার পর। ২৩টা গ্র্যান্ডস্ল্যাম জেতার পর। সেরেনা তো আধুনিক টেনিসের উজ্জ্বল দূত নন, আধুনিক আমেরিকার সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তনের কারিগরও। কিন্তু পাওয়ার টেনিসের প্রভাব কোর্ট থেকে জীবনে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বোধহয় কেউ নেই!
বহু বদলের বেশ কিছুরই অনুঘটক সেরেনা। 'পাওয়ার টেনিস'কে দিশা দেখানো এই পাওয়ার উওম্যান এখানেই আলাদা হয়ে যান দুনিয়ার বাকি সব ক্রীড়াবিদদের থেকে।