'এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর..'। লিখেছিলেন কবি জীবনানন্দ দাশ। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে গোটা ফুটবলবিশ্বের চোখও এক আর্জেন্টাইনের দিকে। লিওনেল মেসি (Lionel Messi)। ফুটবলের বরপুত্র। শেষ বারের মতো তিনি মাঠে নামছেন বিশ্বকাপে। আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে বিশ্বকাপ (Worldcup) ছুঁতে পারবেন কিনা, আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই তার উত্তর মিলবে। কিন্তু মেসি বিশ্বকাপ জিতুন বা নাই জিতুন, ফুটবলের ইতিহাসে তিনি রয়ে যাবেন সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক নক্ষত্র হয়েই। যতদিন ফুটবল থাকবে,থেকে যাবে তাঁর নামও।
ফুটবল দেবতার বিদ্রোহী সন্তান দিয়েগো মারাদোনা (Maradona) অমর হয়ে গিয়েছেন আর্জেন্টাইন তথা বিশ্বফুটবলের ইতিহাসের পাতায়। প্রথা ভাঙাই ছিল তাঁর আনন্দ। মেসি (Lionel Messi) ঠিক উল্টো। কড়া অনুশাসনে গড়া তাঁর জীবন। মাঠের ভিতরে এবং বাইরে অত্যন্ত শৃঙ্খলাপরায়ন। খেলার মাঝে তাঁকে উত্তেজিত হতে প্রায় দেখাই যায় না। তবে এই বিশ্বকাপ যেন ব্যতিক্রমী। মেসির মধ্যে প্রথম থেকেই স্পষ্ট ছিল জেতার উদগ্র বাসনা। হয়ে উঠেছিলেন প্রকৃত অর্থেই গোটা স্কোয়াডের সেনাপতি। হল্যান্ড ম্যাচে যে আগ্রাসী মেসিকে দেখা গিয়েছিলেন, তেমন অভিজ্ঞতা ফুটবলবিশ্বের খুব বেশি হয়নি।
Lionel Messi: ফাইনালের আগে মেসিকে খোলা চিঠি, প্রাক্তন ছাত্রকে একবার জড়িয়ে ধরতে চান মনিকা
ফুটবলজীবনে মেসি সবকিছুই পেয়েছেন। বার্সেলোনার হয়ে আকাশচুম্বী সাফল্য, একের পর এক ব্যালন ডি'ওর, আর্জেন্টিনার জার্সিতে কোপা আমেরিকা! অধরা রয়ে গিয়েছে শুধু বিশ্বকাপ। টানা তিনটি বিশ্বকাপে তাঁর দিকে প্রত্যাশাভরা চোখ নিয়ে তাকিয়েছিল আর্জেন্টাইন জনতা। ২০১০ সালে কোচ ছিলেন স্বয়ং দিয়েগো মারাদোনা। কিন্তু দুর্ধর্ষ জার্মানির সামনে গুঁড়িয়ে গিয়েছিলেন মেসিরা। ২০১৪ সালেও অনবদ্য খেলেছিলেন লিও। দলকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন ফাইনালে। কিন্তু খুব কাছ থেকে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। সেবারও ঘাতক জার্মানি। তারপর ২০১৮ সালের শোচনীয় ব্যর্থতা পেরিয়ে কাতারে ফুটবলার জীবনের শেষ গুরুত্বপূর্ণ লড়াই লড়তে এসেছেন মেসি। কেবল আর্জেন্টিনা নয়, গোটা বিশ্বের কোটি কোটি ফুটবলপ্রমেী তাকিয়ে তাঁর দিকে। এমন ফুটবলার এই পৃথিবী দু-একবারই পায়৷ এই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচ। গোধূলিলগ্নেও ফুটবলপ্রেমীদের রাঙিয়ে দিয়ে গেলেন মেসি। ফুটবল তাঁকে রেখে দেবে মনের মনিকোঠায়।