দোহার মাঠ ছেড়ে বেরোচ্ছেন এক স্বপ্নের জাদুকর। লিওনেল মেসি। এক জীবন্ত কিংবদন্তি, এক লার্জার দ্যান লাইফ ইমেজের শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচ! নায়কের প্রস্থান ঠিক যেভাবে হওয়ার কথা, কাতার বিশ্বকাপের ইতিহাস রচিত হল, সেভাবেই। মেসির হাত ধরে বহু কাঙ্ক্ষিত জয় এল নীল সাদা জার্সির দেশে।
বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে ফ্রান্সের কোচ দেঁশ সাংবাদিক বৈঠকে এসে বলেছেন, অনেক ফরাসীও নাকি লিওনেল মেসির হাতে বিশ্বকাপ দেখতে চান। আর্জেন্টিনার প্রতিটি ম্যাচে গ্যালারিতে দেখা গিয়েছে এমন অসংখ্য সমর্থককে, যাঁরা আর্জেন্টাইন নন৷ কিন্তু তাঁদের গায়ে লিও মেসির জার্সি।
এমনও হয়? এমনটাও সম্ভব? হ্যাঁ, হয়। মানুষটার নাম লিওনেল মেসি হলে এমনটা হয়। কাতার বিশ্বকাপের শুরু থেকে শেষ- সবটুকুই মেসিময়। এক ফুটবল তারকা কোন উচ্চতায় পৌঁছলে প্রতিপক্ষের একাংশও তাঁর হাতে বিশ্বকাপ দেখতে চায়।
৫ টা বিশ্বকাপজুড়ে ২৬ টা ম্যাচে এমন শিল্প ছড়ানোর নজির আর কোনও আর্জেন্টাইনের নেই। বুয়েন্স আয়ার্স থেকে বরানগর, এবারের বিশ্বকাপজুড়ে একটাই নাম, লিওনেল মেসি। ভারত, যে দেশ কোনও দিন বিশ্বকাপ খেলেইনি, সেখানে মেসির জন্য যজ্ঞ থেকে পুজো, দোয়া, প্রার্থনা।
বিশ্বকাপের মঞ্চে আর দেখা যাবে না লিওকে। আর্জেন্টিনা জিতলেও না, হারলেও না। শুধু এটুকু যথেষ্ট ছিল আপমর বিশ্ববাসীর কাছে, আবেগে, ভালবাসায়, প্রিয় নায়ককে ভরিয়ে রাখতে। ৯০ মিনিটের খেলায় হার-জিত বড় অনিশ্চিত। তাই, মেসির ঠোঁট সোনালি পদক ছুঁতে পারবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিলই। হার-জিতের উর্ধে গিয়ে মানুষ শুধু সাক্ষী থাকতে চেয়েছে এক ইতিহাসের। আদ্য পান্ত হারে ভরা মানুষটারও গর্বে ভরে গেছে বুক। তিনি পারেননি তো কি হয়েছে, লিও মেসি নামের এক জাদুকর তো জিতে গেছে, মাঠ ছাড়তে পেরেছেন রাজার মতো।