কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) নতুন নতুন কামাল চমকে দিচ্ছে রক্তমাংসের মানুষকে৷ এর আর্শীবাদ যেমন আছে, তেমন আছে অভিশাপও৷ বহু সংস্থায় কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে। কারণ মানুষের কাজ অনেক কম সময়ে করে দিচ্ছে এআই৷ এবার এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজন আস্ত মডেল তৈরি করে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা। তার নাম আইতানা লোপেজ৷ সে স্পেনের প্রথম এআই মডেল। আইতানার কার্যকলাপ রীতিমতো চোখ কপালে তোলার মতোই।
আইতানা যে রক্তমাংসের মানুষ নয়, তাকে দেখে বা কথা বলে তা বোঝে, কার সাধ্য? মাথাভর্তি ঘন ঢেউখেলানো গোলাপি রঙের সিল্কি চুল। ঠিক যেন বার্বি ডল। টিকালো নাক, চোখের ওপর ট্রিম করা সরু ভুরু, এককথায় অপরূপা সুন্দরী।
মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া এই এআই কন্যের রোজগারও চোখ কপালে তোলার মতো। মাসে তার আয় দশ হাজার ইউরো। ভারতীয় মুদ্রায় যা ন’লক্ষ টাকা। এই টাকা পুরোটাই যাচ্ছে আইতানার স্রষ্টাদের পকেটে।
সোস্যাল মিডিয়ায় আইতানার অনুরাগীর সংখ্যা ১২ কোটির বেশি। সে মূলত তিনটি কাজ করে। মাদ্রিদে সপ্তাহান্তে ছুটি কাটানোর জন্য বিভিন্ন আকর্ষণীয় জায়গার সুলুকসন্ধান দেয়, আকর্ষণীয় গেমিং সেশনের খোঁজ দেয় এবং পশ্চিম এবং প্রাচ্যের সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটায়।
কীভাবে আইতানাকে তৈরি করার কথা মাথায় এল স্রষ্টাদের? কারণ, এক সময় বার্সিলোনায় কিছু কারণে এত খারাপ সময় যাচ্ছিল, বিজ্ঞাপনের জন্য পয়সা দিয়েও মডেল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁদের একেক জনের একেক সমস্যা, কারোর পারিশ্রমিক মনের মতো হচ্ছে না, কারোর সংশ্লিষ্ট ব্র্যান্ডের মুখ হতে সমস্যা, এরকম আরও অনেক। এই সমস্যার মুখে পড়ে একটি নতুন উপায় বার করা হল। রক্ত মাংসের মডেল না হয়ে যদি হয় আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে বানানো মডেল? সেই ভাবনা থেকেই আইতানার জন্ম। এখন স্পেনের কত কত ব্র্যান্ডের মুখ আইতানা!
তবে সমস্যা একটা আছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি রোবটকে কেন ফলো করবে মানুষ? রোবট না পারে চিন্তা করতে, না আছে বুদ্ধি, না আছে সৃজনশীলতা, তাহলে আছেটা কী? মানুষ গল্প শুনতে ভালবাসে, তাই ইন্সটাগ্রামে আইতানার ছবি দেওয়া হয় নানা মেজাজে, নানা সাজে। বেশ খানিকটা 'মানবিক' করে তুলতে, একঘেয়েমি কাটাতে লুক বদলও হয় আইতানার।
আইতানার দুর্দান্ত সাফল্য দেখে পরবর্তী মডেল তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। তার নাম হবে মাইয়া। আইতানার তুলনায় সে হবে খানিকটা লাজুক। তার মাধ্যমে আরও বেশি উপার্জন করবেন বলে আশা করছেন স্রষ্টারা।